চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. এএসএম মাহফুজুর রহমান রিগ্যানের বিরুদ্ধে পাখি শিকার করে পিকনিক করার অভিযোগ উঠেছে। দুটি শামুকখোল পাখি শিকার করে তার ছবি ফেসবুকে দেওয়ায় জেলায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। যদিও পরে গত সোমবার রাতে সমালোচনার মুখে ওই ছবিগুলো ফেসবুক থেকে মুছে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, সাব্বির আহমেদ নামে এক ব্যক্তির ফেসবুক টাইমলাইনে তিনটি ছবি পোস্ট করা হয় ১১ ডিসেম্বর রাত ৯ টা ৫২ মিনিটে। তিনটির মধ্যে দুটি ছবিতে ছিলেন ডা. এএসএম মাহফুজুর রহমান রিগ্যান। ছবিতে দেখা যায়, একটি আম বাগানে এয়ারগান হাতে দাঁড়িয়ে আছেন ডা. রিগ্যান। তার দুই পাশে শিকার করা দুটি শামুকখোল পাখি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন দুই যুবক। ছবির বিবরণ লেখা হয়েছে ইংরেজিতে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘আমাদের সম্মানিত ও অতিপ্রিয় ডা. তার পছন্দের ডায়না ৩৫ এয়ারগান দিয়ে শামুখখোল পাখি শিকার করেছে। আমরা এখন একটি পিকনিক পার্টি উপভোগ করছি। আপনাদেরও আন্তরিক আমন্ত্রন জানাচ্ছি’।
সোমবার রাত পর্যন্ত ফেসবুকের ওই ছবিগুলোতে ৯৩ জন ‘লাইক’ ও ‘লাভ’ দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কমেন্ট করেছিলেন ১৮ জন। শেয়ার করেছেন আরও দুজন। কমেন্টে নির্ঝর মাহফুজ নামে একজন লিখেছেন, ‘এটা ঠিক নয়। আমাদের উচিত অতিথি পাখি শিকার বন্ধ করা। ওই কমেন্টের উত্তরে ডা. এএসএম মাহফুজুর রহমান লিখেছেন ‘এটা হালাল’।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাখিসহ বন্যপ্রাণি সংরক্ষণে কাজ করছে 'সেভ দ্য নেচার' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংঠনের সমন্বয়কারী রবিউল হাসান ডলার জানান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ অনুযায়ী যে কোনো ধরনের পাখি শিকার নিষিদ্ধ। ওই আইনে পাখি শিকার, হত্যা, আটক ও ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
এদিকে অভিযোগের ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ডা. এএসএম মাহফুজুর রহমান রিগ্যান বলেন, পাখিগুলো অন্যরা মেরেছে। আমি এয়ারগান হাতে কেবল ছবি তুলেছি। এরপর আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই তিনি সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেন।
এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. প্রধান মো. আবুল কালাম জানান, ডা. রিগ্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে এখনও কেউ তাকে অবহিত করেননি। তবে ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, যেহেতু দেশের প্রচলিত আইনে পাখি শিকার নিষিদ্ধ। কাজেই পাখি শিকার করে ডা. রিগ্যান আইন বহির্ভূত কাজ করেছেন। অন্যদিকে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমার ঠিক জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
বিডি প্রতিদিন/১৪ ডিসেম্বর ২০১৬/হিমেল