নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে রেস্টুরেন্টে ওসির রাতের খাবার খাওয়ার ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সাহেদ ইসলাম নামে ওই মাদক ব্যবসায়ী নিজের ফেসবুক পেজে ওসির সঙ্গে ডিনারের ছবিটি পোস্ট করেন। গতকাল রাত সাড়ে ১২টায় সিদ্ধিরগঞ্জের পুল এমএস টাওয়ারস্থ ফুড গার্ডেন থেকে পোস্টটি দেয়া হয় ফেসবুকে। এরপর থেকেই এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি (অপারেশন) মো. নাছির উদ্দিন সরকারের সাথে ছবিতে যাদেরকে দেখা গেছে, তারা সিদ্ধিরগঞ্জের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।
এলাকাবাসী জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের পাগলাবাড়ি এলাকার মনা পাগলার ছেলে সাহেদ ইসলাম সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকায় থাই ব্যবসা করে আসছিল। থাই ব্যবসার অন্তরালে সাহেদ ইসলাম ফেনসিডিল ও ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে। এ কারণে সম্প্রতি তাকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে। কিন্তু পরে তাকে ৩৪ ধারায় তাকে আদালতে চালান দেয়া হয়। জামিনে মুক্ত হয়ে সাহেদ ইসলাম এলাকায় ফিরে এসে ফের ব্যবসা করতে শুরু করেন। সহযোগী রাজু ওরফে সুর্য্যসহ কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে মাদক বিক্রি ও মাদক সেবনের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এলাকাবাসী জানায়, একটি প্রভাবশালী চক্রের শেল্টারে থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না। নিজের মাদক ব্যবসায় যেন কোন প্রকার সমস্যা সৃষ্টি না হয় সে জন্য সম্প্রতি সে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজনের সাথে নিজ থেকেই সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। কোন পুলিশ অফিরসারকে পেলে নিজ থেকে পরিচয় হয়ে তাদেরকে আপ্যায়ন ও বিভিন্ন উপঢৌকন দিতে থাকে সাহেদ ইসলাম। কিছুদিন পূর্বে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় যোগদান করে ওসি (অপারেশন) নাসির উদ্দিন সরকার। কৌশলে তার সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে সাহেদ ইসলাম। গতকাল বুধবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের ফুড গার্ডেনে সহযোগী রাজু ওরফে সূর্য্যকে নিয়ে খেতে যান। ফেসবুকে সাহেদ একটি সেলফি আপলোড দেয়। রাত সাড়ে ১২ টায় দেওয়া ওই ফেসবুক পোস্টের ছবিতে সাহেদ ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি (অপারেশন) নাসির উদ্দিন সরকার সাহেদ ইসলাম ও রাজু ওরফে সূর্য্যকে ডিনার করতে দেখা যায়। ওই ছবি দেখে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। একজন মাদক ব্যবসায়ীর সাথে ওসি (অপারেশন) নাসিক উদ্দিনের ডিনারের ছবি দেখে উঠছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি (অপারেশন) মো. নাছির উদ্দিন সরকার জানান, তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় নতুন এসেছেন। তিনি সাহেদ ইসলাম নামের একজনকে চেনেন যার থাইয়ের দোকান রয়েছে। তিনি তাদেরকে ডেকেছিলেন অফিসে থাইয়ের কাজ করার জন্য। কিন্তু তারা যে মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত সেটা তিনি জানতেন না। যদি তারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ