ভিক্ষা করে বাঁচতে চান না তাই জীবনের পড়ন্ত বিকেলে এসেও নিজে ভ্যান চালিয়ে খড় বিক্রি করে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন কাচু মোহাম্মদ। প্রায় শতবছরে এসেও থমকে যাননি তিনি। নেই কোন জমি। বসতভিটায় ছোট্ট একটি কুড়ে ঘর। যেখানে থাকেন সেটাও রেজিস্ট্রি পাননি আজও।
৯০ বছর বয়সে ভ্যান চালিয়ে কাচু মোহাম্মদ অজোপাড়া গায়ে বাড়ী বাড়ী গিয়ে খড় কিনেন। সেই খড় নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্যান চালিয়ে বিক্রি করেন। এতে সারাদিনে মাত্র ১০০/১২০ টাকা আয় করেন। এই দিয়ে চলে সংসার, ওষুধপত্রসহ সবকিছু। অসুস্থ থাকলে ওইদিন আয় বন্ধ হয়ে যায়। কষ্টে পড়েন তিনি। এরপরেও বার্ধক্যের কাছে মাথা নত করেননি। ভিক্ষাবৃত্তিতে যাননি। বরং পরিশ্রম করে বেচে থাকতে চান দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সুজালপুর ইউপির বর্ষা গ্রামের এই কাচু মোহাম্মদ।
কথা হয় তার ছোট্ট কুঠিরে। কাচু মোহাম্মদ জানান, একটানা ৫০বছর ধরে ভ্যান চালিয়ে খড় বিক্রি করে আসছি। আমার এই বসত ভিটাটুকু কেনার জন্য স্থানীয় সাবেদ আলীর কাছে অনেকদিন আগে টাকা দিলেও আজও এটা আমায় রেজিস্ট্রি করে দেননি। পরিশ্রম করে খেতে চাই কিন্তু এখন শরীরটাকে চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমার ১ ছেলে এবং ৪ মেয়ে। সব ছেলে মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। সবাই আলাদা আলাদা সংসার করে খায়। আমরা বুড়াবুড়ি এভাবেই জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি। বয়স্ক ভাতা আমি পাই। কিন্তু আমার স্ত্রী নুরী বেগমকেও বয়স্ক ভাতা দেয়া হলে আমার জন্য ভাল হতো। ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী তার স্ত্রীর বয়স এখন ৮১বছর আর কাচু মোহাম্মদের ৯০ বছর।
বিডি প্রতিদিন/১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/হিমেল