রাঙামাটিতে এখনো রয়ে গেছে যুদ্ধাপরাধীর নামে সড়ক ‘ত্রিদিব নগর’। হাইকোর্টের নির্দেশ থাকলেও পরির্বতন করা হয়নি এ সড়কের নাম। এ নিয়ে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৬ই ডিসেম্বর হাইকোর্ট দেশের বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ সব স্থাপনা থেকে স্বাধীনতা বিরোধীদের নাম মুছে ফেলার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে শিক্ষা সচিব ও স্থানীয় সরকার সচিবকে নির্দেশ দেন আদালত। হাইকোর্টের এ আদেশ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থাপনা থেকে যুদ্ধাপরাধীদের নাম অপসারণ করলেও রাঙামাটির প্রয়াত চাকমা রাজা ত্রিদিব রায়ের নামে থাকা সড়ক ও জায়গার নাম পরিবর্তন করা হয়নি এখনও।
এ ব্যাপারে রাঙামাটি জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রবার্ট রোনাল্ড পিন্টু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিন দাবি ছিল- যেসব এলাকা বা সড়কে যুদ্ধপরাধীদের নাম রয়ে গেছে সেগুলোর দ্রুত নাম পরির্বতন। কিন্তু দীর্ঘ বছরেও তা পরিবর্তন হয়নি। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা সভায় ‘ত্রিদিব নগর’ ও ‘এইচটি হোসেন’ নামে যেসব সড়কের নামকরণ করা হয়েছে তা দ্রুত পরির্বতনের করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান ও পৌর মেয়র মো. আকবর হোসেইন চোধুরী উপস্থিত থেকে সভায় সবার সম্মিতিক্রমে আগামী একমাসের মধ্যে এসব সড়কের নাম পরির্বতন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বাঙালী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা শাহাদাৎ ফরাজি সাকিব বলেন, অদৃশ্য কারণে এখনো রাঙামাটিতে যুদ্ধাপরাধী ত্রিদিব রায়ের নামে সড়কের নাম পরিবর্তন করা হয়নি। স্বাধীন বাংলাদেশে এ যুদ্ধাপরাধীর নাম স্থান পায় কী করে? এটা আসলে দুঃখজনক। তিনি আরও বলেন, আমরা স্বাধীন দেশের মাটিতে যুদ্ধাপরাধীর কোন চিহ্ন চাই না।
অভিযোগ রয়েছে, ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দেশের স্বাধীনতা অর্জনের সময় তৎকালীন চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় দেশ ছেড়ে প্রথমে মিয়ানমারের তৎকালীন রাজধানী ইয়াংগুন এবং পরে সোজা পাকিস্তানে পাড়ি জমান। কারণ তিনি কোনোভাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বিজয়কে মেনে নিতে পারেননি। শুধু তাই নয়, সেখানে গিয়ে তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেন। এছাড়া মৃতুর পর এ যুদ্ধাপরাধীর লাশ পর্যন্ত বাংলাদেশে আনতে দেয়নি এ অঞ্চলের মানুষ। এদিকে ‘ত্রিদিব নগর’ এলাকা ও ‘ত্রিদিব নগর’ সড়কের পুনঃনামকরণের দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন, রাঙামাটি পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন সময় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ