মিয়ানমার সরকারের অং সান সুচি কর্তৃক গঠিত আরকানের সহিংসতা তদন্ত কমিশনের ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল সোমবার বালুখালী নতুন রোহিঙ্গা বস্তি পরিদর্শন করেছেন।
প্রতিনিধিদল নতুন আশ্রয় নেয়া অন্তত ১০ জন নির্যাতিত নারী ও পুরুষের পৃথক পৃথক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মংডুসহ বিভিন্ন এলাকায় সে দেশের সেনাবাহিনী ও রাখাইন সন্ত্রাসীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হওয়া, ঘরবাড়ি হারানো বাংলাদেশের উখিয়ার বালুখালী বনভূমির জায়গা দখল করে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অবস্থান পর্যবেক্ষণের জন্য মিয়ানমার সরকারের গঠিত তদন্ত কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল পরিদর্শনে বস্তিতে আসেন।
এসময় নির্যাতিত রোহিঙ্গারা তদন্ত কমিশনকে পূর্ণাঙ্গ নাগরিকত্ব দিয়ে মিয়ানমারে ফেরত নেয়া সহ ছয় দফা দাবী তুলে ধরেন এবং রোহিঙ্গা নির্যাতনে জড়িতদের আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচারের দাবী জানান।
তদন্ত কমিশনের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মিয়ানমার সরকার গঠিত তদন্ত কমিশনের সদস্য সচিব, জ্য মিন প্য, কমিশনের সদস্য ড. অং থুন তেথসহ ১১ সদস্য। প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ছিলেন আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওম)সহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারে ৯ অক্টোবর নিরাপত্তা বাহিনীর চৌকি আক্রান্তের ঘটনায় অপারেশন ক্লিয়ারেন্স এর নামে প্রায় চার মাসব্যাপী রাখাইন প্রদেশের মংডু, বুচিডং, আকিয়াবসহ বিভিন্ন রোহিঙ্গা অধ্যুষিত পাড়া, গ্রামে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হয়। এ প্রেক্ষিতে সীমান্ত পেরিয়ে প্রায় ৯০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন মহল থেকে উক্ত অপারেশনের নামে রোহিঙ্গা নিধনের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে অভিযোগ তোলা হয়। মিয়ানমার সরকার বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। সম্প্রতি মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষদূত ইয়াং ঘি লি ও আরকানের জন্য গঠিত আরকান কমিশন তথা জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কপি আনান কমিশন অন্তবর্তীকালীন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর প্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে মিয়ানমার তদন্ত কমিশনের বাংলাদেশে আগমন।
বিডি প্রতিদিন/২০ মার্চ, ২০১৭/ফারজানা