পুরনোকে বিদায় এবং নতুনকে বরণ করে নিতে সারা দেশ যখন আনন্দে মাতোয়ারা, ঠিক তখনই বাঁধ ভাঙা হাওরগুলোতে চলছে কান্নার রোল। হাওরাঞ্চলের একমাত্র বৈশাখী ফসল ঘরে তোলার আগেই পানিতে তলিয়ে গেছে। কীভাবে তারা নতুন বছরকে বরণ করবে এ নিয়ে ভাবনারই কোন অবকাশ নেই। যখন মাঠে মাঠে ধান উড়ানোর কথা, তখন তারা গো খাদ্যের অভাবে দিশেহারা।
নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক পানির দরে বিক্রি করে দিচ্ছেন তাদের প্রিয় পশুগুলোকে। হাওরের প্রতিটি বাড়ির শোভা ছিল ২ টি বা ৪ টি করে গরু। কোথাও কোথাও গরুর পাল। কিন্তু এ বছর আগাম পানিতে ফসল তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যটুকুও চলে গেছে। অনেকে বেশি দরে উজান থেকে নিয়ে যাচ্ছে খড়। আর সেই অর্থ যাদের নেই তারা আবার নাম মাত্র দামে বাজারে ছেড়ে দিচ্ছেন গরুগুলোকে। নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরী ও মাহনগঞ্জের প্রতিটি গরুর বাজারে বিক্রেতাদের ভীড় থাকলেও নেই তেমন ক্রেতা। এই সুযোগে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা অল্প দামে গরু কিনে নিচ্ছেন। এগুলো তারা পাঠিয়ে দিচ্ছে ঢাকা, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
বরান্তর এলাকার নবাব আলী একজন প্রান্তিক কৃষক। তার ছোট বড় মিলিয়ে হালের জন্য ৭ টি গরু ছিল। কিন্তু ধার দেনা করে ৩ একর জমিতে চাষ করার পর সবটুকুই পানির নীচে চলে গেছে। এখন ঘরের খাবারটুকুও আর অবশিষ্ট নেই। গোখাদ্যেরও একই অবস্থা। যে কারনে বাধ্য হয়েই নামমাত্র দামে তার সবগুলো গরু বিক্রি করে দিয়েছেন। বৈশাখ উদযাপন এখন তার স্বপ্নেরও বাইরে।
উল্লেখ্য, পাহাড়ী ঢলে গত ১ এপ্রিল মোহনগঞ্জের চর হাইজদা বেড়ী বাঁধ ভেঙে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল পুরোটাই পানিতে তলিয়ে গেছে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ