তিনদিনের টানা ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানের লামা পৌর এলাকাসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের নিচু এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। মাতামুহুরী নদী, লামাখাল, ইয়াংছা খাল, বগাইছড়িখাল ও পোপা খালসহ বিভিন্ন স্থানের পাহাড়ি ঝিরিগুলোতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে এখানকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
কর্মহীন হয়ে সবচেয়ে বেকায়দায় পড়েছে শ্রমজীবি মানুষগুলো। একটানা বৃৃষ্টির কারণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসও দেখা দিয়েছে। বর্ষণের পানির স্রোতে সড়ক ভেঙ্গে ও সড়কের উপর পাহাড় ধসে পড়ে বিভিন্ন স্থানে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ মাতামহুরী নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। পাহাড় ধসের কারণে বান্দরবান সদরের সাথে রুমা উপজেলা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
ভারী বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানের পাহাড় ধসে প্রাণ হানির আশঙ্কায় জেলা প্রশাসন, লামা পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোর পক্ষ থেকে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদেরকে নিরাপদে আশ্রয় নেয়ার জন্য দফায় দফায় তাগিদ দেয়া হয়। বন্যা কবলিতদেরকে আশ্রয় নেওয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের কোয়ার্টার খুলে দিয়েছে।
এ টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকলে ভয়াবহ বন্যাসহ পাহাড় ধসে মানবিক বির্পর্যয়ের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টানা বর্ষণ অব্যাহত ছিল।
লামা পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম জানান, প্রবল বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে গ্রামীণ রাস্তাঘাটের ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
এছাড়া লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা, বৈলারচরসহ নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হওয়ার খবর জানান চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন।
এদিকে খাল ও ঝিরির পানি বৃদ্ধি পেয়ে লামা পৌরসভা, লামা সদর, গজালিয়া, ফাইতং, ফাঁসিয়াখালী, আজিজনগর, সরই ও রুপসীপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের প্রায় ১০ হাজার মানুষ গৃহবন্দি হয়ে দুর্ভোগে রয়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
লামা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণসম্পাদক জাপান বড়ুয়া জানান, গত দুই দিনের বর্ষণে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঢলের পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যবসায়ী ও পরিবারগুলো তাদের মালামাল নিরাপদে সরিয়ে নিচ্ছেন।
বিডি প্রতিদিন/ ৪ জুলাই, ২০১৭/ ই জাহান