নাটোরের উত্তরা গণভবনের গাছ কাটার ঘটনায় অভিযুক্ত ঠিকাদার সোহেল ফয়সালকে (৩৩) কারগারে প্রেরন করেছে আদালত। মঙ্গলবার বিকেলে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট রবিউল ইসলামের আদালতে ঠিকাদার সোহেল ফয়সাল আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করেন। তবে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে জেলা প্রশাসনের সহকারী নাজির মমতাজ আলী বাদী হয়ে ওই ঠিকাদারকে অভিযুক্ত করে নাটোর সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় গণভবনের ভেতরের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী গাছ কাটার ঘটনায় গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান ও গণপূর্তের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজোশে ঠিকাদার সোহেল ফয়সাল টেন্ডারের অতিরিক্ত ১০৯২ ঘনফুট কাঠ ও ১৪২ ঘনফুট গাছের ডালপালা কেটে নেয়। যা তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে সত্যতা পাওয়া যায়।
নাটোর আদালতের পুলিশের পরিদর্শক নাসির উদ্দিন মন্ডল জানান, গাছ চুরির মামলার একমাত্র আসামি ঠিকাদার সোহেল ফয়সাল নাটোর সদর আমলী আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন।
এসময় ঠিকাদার সোহেল ফয়সালের আইনজীবী লোকমান হোসেন আদালতকে জানান, তার মক্কেল নিরাপরাধ। গাছ চুরির ঘটনার মূল অপরাধীদের এই মামলায় আসামি করা হয়নি। ঠিকাদার বিধি বিধান মেনে গাছ কেটেছেন।
তবে আদালতে সরকার পক্ষে দায়িত্বরত পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম জামিনের আবেদনের বিরোধীতা করেন। তিনি আদালতকে বলেন, ঠিকাদার সোহেল ফয়সাল নিলামে যে সমস্ত গাছ কিনেছেন তিনি তার চেয়ে চার লক্ষাধিক টাকার অতিরিক্ত গাছ প্রতারণা করে চুরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে এই আসামি বিপুলসংখ্যক গাছ চুরি করে দুঃসাহস দেখিয়েছেন। তাকে জামিন দেওয়ার প্রশ্নই আসেনা।
আদালতের বিচারক রবিউল ইসলাম উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ঠিকাদার সোহেল ফয়সালের জামিনের আবেদন নাকচ করেন এবং তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশের পর পরই তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
উপ পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম ঠিকাদার সোহেল ফয়সালকে হাজতে নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “আদালত মামলার গুরুত্ব ও অভিযুক্ত ব্যক্তির অপরাধের বিষয়টি বিবেচনা করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, নাটোরের উত্তরা গণভবনের মরা এবং ঝড়েপড়া তিনটি গাছ এবং কিছু গাছের ডালপালা মাত্র ১৮ হাজার টাকায় গাছ কর্তনের অনুমতি পায় ঠিকাদার সোহেল ফয়সাল। কিন্তু ইজারার বাহিরে ১৭টি শতবর্ষী তাজা গাছ এবং ৪৮টি গাছের ডালপালা যার আনুমানিক তিন লাখ ৬৩ হাজার টাকার গাছ কেটে ফেলার সত্যতা পাওয়া যায়।
বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর