কোন কিছুতেই থামছে না জেলার বিভিন্ন নদ-নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জেল-জরিমানা করেও ঠেকাতে পারছে না প্রভাবশালীদের এই রমরমা ব্যবসা। বরং বালু উত্তোলনের ব্যবসা দিন দিন ফুলে ফেঁপে উঠছে। আর অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে বহু বাড়ি-ঘর ও স্থাপনা নদ-নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
অবৈধ বালু উত্তোলনে চার উপজেলার মধ্যে শিবচর শীর্ষে অবস্থান করছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই জেলার শিবচরের সাবেক আড়িয়াল খাঁ নদের শাখা ও বন্দরখোলা কোল (উন্মুক্ত জলাশয়) প্রতিবছর সরকার থেকে ইজারা দেওয়া হয়। এই জলাশয়ে অবৈধ ভাবে ড্রেজার বসিয়ে প্রায় সারা বছরই বালু উত্তোলণ করে বিক্রি করছে এক শ্রেণির অবৈধ বালু ব্যবসায়ী। এ জলাশয় থেকে অবৈধ ভাবে ড্রেজারের মাধ্যমে পাইপ দিয়ে সরাসরি বালু নিয়ে দূর-দূরান্তের বিভিন্ন পুকুর-খাল বা জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে দেদারছে। এতে একদিকে নদী পাড়ের মাটি আলগা হয়ে বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে যাচ্ছে।
অন্যদিকে পুকুর-খাল, ডোবা-জলাশয় ভরাট করার কারণে সামান্য বৃষ্টি নামলেই সৃষ্টি হচ্ছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। ফলে পরিবেশের বিপর্যয়ের আশংকা করছেন সচেতন মহল। একই কারণে অনুমোদন বিহীন এসব ড্রেজার দ্বারা বালু উত্তোলণ করায় সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের সাদীপুর থেকে পাঁচ্চর ইউনিয়নের ছোট বাহাদুরপুর হইয়া চাঁন মিয়ার বেড়িবাধঁসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর পর দু’টি অভিযান পরিচালিত হয়। সে সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জেল-জরিমানাসহ ড্রেজার পুড়িয়ে দেয়। এর কিছুদিন যেতে না যেতেই আবার এ সব জলাশয় থেকে বালু উত্তোলণ শুরু হয়।
বালু উত্তোলনের স্থান থেকে প্রায় ৪/৫ কিলোমিটার দূরে পাইপের মাধ্যমে বালু নেয়া হচ্ছে। এসব বালু দিয়ে ঐ এলাকার আশে-পাশের খাল, ডোবা, নালা ও পুকুর ভরাট চলছে। গত তিন মাসে ঐ এলাকার আশে-পাশের শতাধিক ছোট-বড় পুকুর ভরাট করা হয়েছে। অবৈধ ড্রেজার দ্বারা বালু উত্তোলন করায় মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে গরীব ও অসহায় মানুষ। মানুষের ঘর-বাড়ি ও স্থাপনা নদীগর্ভে নিলীন হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না এ সব মানুষ। একই অবস্থা চলছে সদর উপজেলার আড়িয়ালখাঁ নদের বিভিন্ন পয়েন্টে। রাজৈর উপজেলার নিন্মকুমার ও আড়িয়ালখাঁ নদের হরিদাসদি-মহেন্দ্রদি এলাকার একাধিক স্থানে। কালকিনি উপজেলার আড়িয়ালখাঁ ও পালরদী নদীর হোগলপাতিয়া, ফাসিয়াতলা, সাহেবরামপুর এলাকায়।
এ ব্যাপারে শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান আহমেদ বলেন, ‘আমরা এর আগেও অবৈধ ড্রেজার উচ্ছেদ করেছি। যেখানে অবৈধ ড্রেজার দ্বারা বালু উত্তোলণ করা হবে আমরা দ্রুত তা বন্ধে ব্যবস্থা নেবো।’
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন