আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্ণেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি বলেছেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সতর্কতার সাথে দলীয় প্রার্থী নির্বাচনের কাজ শুরু করেছে। এ উপলক্ষে সারাদেশের ৩০০ আসনে দলীয় জরিপ শুরু হয়েছে। প্রতিটি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দলীয় অবস্থান, কর্মকাণ্ড, ব্যক্তি ইমেজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আর নির্বাচনের আগে তৃণমূল কর্মীদের মতামত ও মাঠ জরিপের সমন্বয়ে চূড়ান্তভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা।’
শনিবার সকালে নাটোর শহরের কানাইখালী মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত কর্মীসভায় বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ফারুক খান বলেন, নির্বাচনের আগে দলে কোনো বিভেদ সহ্য করা হবে না। দলের ভেতরে থাকা যেসব নেতারা বিভেদ-কোন্দলের সৃষ্টি করবেন তাদের ব্যাপারে তৃণমূল কর্মীরা সতর্ক থাকবেন। আওয়ামী লীগ বড় দল। সেখানে প্রতিযোগিতা থাকবে কিন্তু তা যেন বিভেদে পরিণত না হয়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি কখনো তত্ত্বাবধায়ক, কখনো সহায়ক, কখনো নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলে। আসলে তারা নিজেরাই জানে না তারা কি চায়। দেশের মানুষকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভাঙা রেকর্ড শুনিয়ে বিএনপি আর বিভ্রান্ত করতে পারবে না।
বিএনপি নাটোরের মাটিতে আওয়ামী লীগের অনেক কর্মীর রক্ত ঝরিয়েছে উল্লেখ করে ফারুক খান বলেন, জোট সরকারের আমলে জঙ্গিবাদের চারণভূমি নাটোর বর্তমান সরকারের আমলে শান্তির জনপদে পরিণত হয়েছে।
শান্তি ও উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে নাটোরের ৪টি আসনে নৌকাকে বিজয়ী করতে দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান সাবেক এই মন্ত্রী।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায় প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আদালতের রায়ের আগেই বিএনপির নেতারা রায় দিয়ে দিচ্ছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে প্রশ্ন রাখেন, বিএনপি ক্ষমতায় না থেকেও হুংকার দেয়। তারা (বিএনপি নেতারা) কিভাবে জানলেন খালেদা জিয়ার সাজা হবে?
নাটোর জেলার নেতাদের উদ্দেশ্যে নানক বলেন, 'যেখানে দলের কেন্দ্রে কোনো বিভেদ নাই, সেখানে জেলায় কেন এতো বিভেদ-কোন্দল? এ সকল বিভেদ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সরকারের প্রতিটি উন্নয়নের কথা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় না থাকলে দলের প্রতিটি কর্মীকে করুণ পরিণতি বরণ করতে হবে।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নাটোরের ৪টি আসনই আওয়ামী লীগের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। একটি ষড়যন্ত্রকারী ও কুচক্রী মহল দলের ভেতরে থাকা ক্ষমতালিপ্সুদের উস্কে দিয়ে দলে বিভেদ সৃষ্টি করছে। এতে করে তারা দল ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। কেউ এ ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারবে না। এই ঐক্য ধরে রাখার মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে হবে।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস এমপির সভাপতিত্বে কর্মীসভায় আরও বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, নির্বাহী সদস্য আলহাজ মমতাজ উদ্দীন এমপি, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি প্রমুখ।
কর্মীসভায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, মহিলা লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
বিডি প্রতিদিন/২৭ জানুয়ারি ২০১৮/এনায়েত করিম