অবশেষে নিজেদের উদ্যোগে ডাহুক নদী খনন করে স্বাভাবিক গতি প্রবাহ ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন পাথর ব্যবসায়ীরা। প্রশাসন, গণমাধ্যম এবং সামাজিক চাপে এই উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা। এর আগে তারা নদীর গতি প্রবাহকে বন্ধ করে পাথর উত্তোলন করছিলেন।
পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বালাবাড়ি এলাকায় ডাহুক নদীর গতি প্রবাহকে রুদ্ধ করে নদী খনন করে পাথর উত্তোলন করছিলেন প্রভাবশালী কিছু ব্যবসায়ী। প্রশাসনের নানা উদ্যোগকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বেপোরোয়া ভাবে পাথর উত্তোলন করছিল তারা। এতে এই এলাকার অন্যতম প্রধান নদী ডাহুক নিশ্চিহ্ণ হয়ে যায়। পাথরের খাদের বালি এবং মাটি দিয়ে নদীটি আধা কিলোমিটার ভরাট হয়ে বালির ঢিবিতে পরিণত হয়। এই নদী ও নদীর আশে পাশে প্রায় ৩০ জন পাথর ব্যবসায়ী ও ৫ থেকে ৭ হাজার শ্রমিক পাথর উত্তোলনের কাজে জড়িত। নদী হত্যার অপরাধে গত ৩১ জানুয়ারি তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানিউল ফেরদৌস মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। এসময় গণমাধ্যম কর্মী সহ স্থানীয় গণ্যমান্যরাও উপস্থিত ছিলেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতে তিনি আট ব্যবসায়ী কে ২ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন। এর পর ব্যবসায়ীদের নাম পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনলাইন সংস্করণসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হলে তোলপাড় শুরু হয়। রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীদের উপড় চাপ বাড়তে থাকে। একসময় ব্যবসায়ীরা নদী টি খনন করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে রাজি হয় এবং গত ৩ ফ্রেব্রুয়ারি খননের উদ্যোগ নেয়।
ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম জানান, প্রশাসন, মিডিয়া এবং আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ ব্যবসায়ীদের উপর নানা ভাবে চাপ দিয়েছেন। তাই ব্যবসায়ীরা নিজেদের উদ্যোগে নদী খনন করে দিচ্ছেন।
অন্যদিকে যুবলীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম বলেন, আমরা নদীটি খনন করে দিচ্ছি। ডাহুক আগের চেয়ে আরও বেশী প্রবাহমান হবে এটি নিশ্চিত।
তবে নদীটির আশে পাশের পাথরের খাদের বালি এবং মাটি দিয়ে ভরাট হয়ে যাবার আশংকা শেষ হয়নি এখনো। অনেকে এখনো নদীটিতে বালি ফেলছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানিউল ফেরদৌস জানান, এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। নদীর মৃত্যু আমরা দেখতে চাইনা। নদী তার আপন গতিতে চলতে থাকুক।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন