গাজা যুদ্ধ বন্ধ করা এবং হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন।
রবিবার সবচেয়ে বড় সমাবেশটি হয় তেল আবিবের হোস্টেজ স্কোয়ারে। যেখানে বিক্ষোভকারীরা সরকারের যুদ্ধ সম্প্রসারণের পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেন। তাদের আশঙ্কা, গাজা সিটি দখলের এই পদক্ষেপ হামাসের হাতে থাকা ২০ জন জিম্মির জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
বিক্ষোভের অংশ হিসেবে ইসরায়েলজুড়ে এক দিনের ধর্মঘট পালিত হয়। এর ফলে রাস্তা, অফিস ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল। এই বিক্ষোভে প্রায় ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই প্রতিবাদের সমালোচনা করে বলেন, এটি "হামাসের অবস্থানকে আরও কঠোর করবে" এবং জিম্মিদের মুক্তির প্রক্রিয়াকে মন্থর করবে। একই সুরে কথা বলেছেন ডানপন্থী মন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচও। তিনি এই প্রতিবাদকে ক্ষতিকর প্রচারণা হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এটি হামাসের উদ্দেশ্য পূরণে সহায়ক।
জিম্মিদের পরিবার এবং যুদ্ধবিরোধী মানুষের আহ্বানে এই ধর্মঘট পালিত হয়। জিম্মি মাতানের মা, আইনভ জাঙ্গাউকার, যিনি 'হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম'-এর প্রধান ব্যক্তিত্ব। সমাবেশে তিনি বলেন, আমরা একটি সুদূরপ্রসারী ও কার্যকর চুক্তি এবং যুদ্ধের সমাপ্তি চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের অধিকার—আমাদের সন্তানদের ফিরে চাই। ইসরায়েলি সরকার একটি ন্যায়যুদ্ধকে উদ্দেশ্যহীন যুদ্ধে পরিণত করেছে।
এদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে তারা ত্রাণ সংস্থাগুলোর মাধ্যমে গাজায় তাঁবু সরবরাহ পুনরায় শুরু করবে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রায় ১০ লাখ মানুষকে গাজা সিটি থেকে দক্ষিণের শিবিরে সরিয়ে নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর গাজা যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে। জাতিসংঘের মতে, গাজার প্রায় ৯০% মানুষ, অর্থাৎ ১.৯ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং সেখানে ব্যাপক অপুষ্টি দেখা দিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল