দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও বিচারব্যবস্থার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি পৃথক বাণিজ্যিক আদালত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব ঘোষণা করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি গতকাল সিলেটের একটি অভিজাত হোটেলে ‘Establishing Commercial Courts : Shaping the Draft Commercial Court Ordinance’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারের মূল পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কোনো পৃথক বিচারিক ফোরাম নেই। এখন কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যিক বিরোধগুলো ছোটখাটো দেওয়ানি মামলার সঙ্গে একই সারিতে নিষ্পত্তি করতে হচ্ছে। এজন্য দ্রুত, কার্যকর বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। এটি আমাদের বিচারকদের প্রতি কোনো সমালোচনা নয়। তাদের নিষ্ঠা প্রশ্নাতীত বরং এটি একটি কাঠামোগত অসঙ্গতি। এর ফলে মামলার জট যেমন বাড়ছে, তেমনি ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও বিনিয়োগ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত শুধু অর্থ ঋণ আদালতে প্রায় ২৫ হাজারের বেশি মামলা অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’ পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠাসংক্রান্ত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি কারও একক কোনো দাবি নয় বরং বাণিজ্যিক মামলাগুলো বিশেষায়িত আদালতে নির্দিষ্ট সময়সীমা ও কার্যকর রায়ের মধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়ার জন্য বৃহৎ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী সবাই দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে এ দাবি জানিয়ে আসছেন। সেমিনারটির মূল পর্বে সূচনা বক্তব্য দেন সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান। এ সেশনে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, ইউএনডিপির রেসিডেন্সিয়াল রিপ্রেজেনটেটিভ স্টিফান লিলার এবং সেমিনারটির সভাপতি হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমেদ।