বগুড়ার শেরপুর উপজেলার জোরগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে আজ ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। বিক্ষোভের মুখে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে ছয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
ভুক্তভোগী উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের জোরগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, গত শনিবার সকালে কোচিং করার জন্য বিদ্যালয়ে যান। পরে প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম রেজা তাকে কক্ষে ডেকে নেয়। এরপর ওই শিক্ষক পরীক্ষায় ভালো নম্বার দেওয়াসহ নানা প্রলোভনে তাকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেন। এমনকি কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিয়ে যৌন হয়রানি করতে থাকেন। পাশাপাশি অশ্লীল কথাবার্তাও বলেন তিনি।
একপর্যায়ে জোরপূর্বক প্রধান শিক্ষকের ওই কক্ষ থেকে বের হয়ে এসে বিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্রী ও শিক্ষকদের কাছে রেজা স্যারের কুকীর্তি ফাঁস করে দেয়। মূলত এরপরই ঘটনাটি প্রকাশ হয়ে পড়ে।
ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে চাইলে অত্র বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী বলেন, এই ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার পর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরও নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের খবর বেরিয়ে আসছে। এমনকি অন্যান্য ভুক্তভোগী ছাত্রীরাও এখন মুখ খুলছেন। এতে করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ক্লাস বর্জনসহ বিক্ষোভ করে প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিমের অপসারণ চাওয়া হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই এসব ঘটনার সমাধান করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা দরকার বলে তিনি মনে করেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন মিন্টু এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠায় তা খতিয়ে দেখতে ছয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগটি প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ নাজমুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, উক্ত ঘটনায় এখনও কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে এই শিক্ষা কর্মকর্তা দাবি করেন।
এদিকে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম রেজা নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, তার বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। আর সে কারণেই তার বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় ওই ছাত্রীকে দিয়ে যৌন হয়রানির এই মিথ্যা নাটক সাজানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার