বান্দরবানের লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে ১১ কিলোমিটার সড়কের বেহালদশার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ৩টি ওয়ার্ডের ১৫ হাজারের বেশি মানুষ। ইউনিয়নের সাপেরগাড় থেকে হারগাজা হয়ে পাগলির আগা দিয়ে ডুলহাজারা সড়কটি ভেঙে বড় বড় গর্ত হয়ে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ পথে চলাচলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা, উন্নয়নে বাধাসহ উৎপাদিত ফসল ও কাঁচামাল বাজারজাত করতে সমস্যায় পড়ছে কৃষকরা। ভঙ্গুর ১১ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে যেখানে সর্বোচ্চ সময় লাগার কথা ২৫-৩০ মিনিট, সেখানে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা সময় লাগছে গন্তব্যে পৌঁছাতে। এতে করে ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে জানান উপজেলার শীর্ঘ কর্তা ব্যক্তিরা।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ৬-৭ বছর আগে ব্রিকসলিং দ্বারা সড়কটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সড়ক দিয়ে অতিমাত্রায় ভারী পাথর, বালু ও গাছের ট্রাক চলাচলের কারণে অতি অল্প সময়ে নষ্ট হয়ে গেছে সড়কটি। কয়েক বছরের ব্যবধানে রাস্তায় ইটের চিহ্ন পর্যন্ত নেই। পাহাড়ি রাস্তার মাঝে মাঝে বড় গর্ত হয়ে গেছে। যেখানে যাত্রীবাহী ছোট গাড়িগুলো চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে অনেক স্থানে কাঁদামাটির গর্তে আটকে যাচ্ছে গাড়ি। বর্ষাকালে এই রোডে গাড়ি চলাচল একেবারে অসম্ভব বলে জানায় এই রোডের জীপ গাড়ি ড্রাইভার আনোয়ার হোসেন, সামশুল ইসলাম সহ অনেকে।
স্থানীয় করিম মিয়া, আল আমিন, রাশেদ পারভেজ ও মনোয়ারা বেগমসহ অনেকে বলেন, বর্ষার ৬ মাস আমাদের হেঁটে বাজারে যেতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে গাড়ি চললেও ভাঙ্গা রাস্তার কারণে তা অপ্রতুল। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ১ ও ২নং ওয়ার্ডের সাপেরগাড়া, হারগাজা, পাগলির আগা ও বাইশারী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের প্রায় ১৫ হাজার অধিক লোকজন এই রোডে যাতায়াত করে। আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। আমরা পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এম.পি’র হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
১নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার নাছির উদ্দিন ও ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার কুতুব উদ্দিন বলেন, রাস্তার চিহ্ন পর্যন্ত নেই। ভেঙে সব শেষ হয়ে গেছে। বিশেষ করে অতিমাত্রায় ভারী পাথর, বালু ও গাছের ট্রাক চলাচলের কারণে অতি অল্প সময়ে রোডটি নষ্ট হয়ে গেছে। এখনি মেরামত করা না হলে সামনের বর্ষায় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।
ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার বলেন, ১৫ হাজার মানুষের ভাগ্যের কথা চিন্তা করে সাপেরগাড় হতে হারগাজা হইয়া পাগলির আগা দিয়ে ডুলহাজারা সড়কটি মেরামত খুব জরুরি হয়ে পড়েছে।
লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, বিষয়টি নিয়ে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি। তিনি দ্রুত রাস্তার মেরামত ও সংস্কারে এলজিইডি হতে ২ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করেছেন।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ জান্নাত রুমি বলেন, আমি সদ্য লামায় যোগদান করেছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে উন্নয়ন কাজটি দ্রুত শুরু করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/৯ এপ্রিল ২০১৮/হিমেল