ফরিদপুরের চরভদ্রসনে সাবেক স্বামীর ছুরিকাহতে নিহত হয়েছেন রিক্তা বেগম নামে এক নারী (২২)। সোমবার রাত নয়টার দিকে চরভদ্রাসন উপজেলার পরিষদ সংলগ্ন চরভদ্রাসন মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনের মাঠে এ ছুরি মারার ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। রিক্তা বেগম সদরপুর উপজেলার চর বিষ্ণপুর ইউনিযনের খেজুর তলার বিশ্বাস ডাঙ্গী গ্রামের কালাম মোল্লার মেয়ে।
জানা গেছে, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার খরিবোনা গ্রামের আলমগীর মিয়ার সাথে প্রায় সাত বছর আগে রিক্তার বিয়ে হয়। বাবার বাড়ি বেড়াতে এসে উপজেলার বাবুরচর খালাশী ডাঙ্গী গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে দর্জি শাহ জালালের দোকানে জামা-কাপড় বানাতে গিয়ে প্রথমে পরিচয় এবং এক পর্যায়ে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরপর তারা গোপনে বিয়ে করে নেন। গত ৮ মার্চ পূর্বের স্বামী আলমগীরকে তালাক দিয়ে নতুন স্বামী শাহ জালালের চরভদ্রাসনে ভাড়া করা বাড়িতে উঠে রিক্তা।
সোমবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বাজার থেকে ঔষুধ কিনে বাড়ি ফেরার সময় চরভদ্রাসন মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনের মাঠে রিক্তা বেগমের গতি রোধ করে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় আলমগীর।
এ সময় মারত্মকভাবে আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে গৃহবধূ। রিক্তার আত্মচিৎকারে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তার পেটে ঢুকে থাকা ছুরিটি বের করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রিক্তার মৃত্যু হয়।
রাহুল নামে আলমগীরের পাঁচ বছরের একটি ছেলে রয়েছে ছেলেটি রিক্তার কাছে থাকত। রিক্তার বর্তমান স্বামী জালাল ছয় বছর আগে একটি বিয়ে করেছে এবং সেই ঘরে জান্নাত নামে তার একটি মেয়ে রয়েছে।
রিক্তার দ্বিতীয় স্বামী জালাল জানান, তার প্রথম স্ত্রী খুশি বেগম(২৪)প্রথমে না জানলেও পরে সে-সহ পরিবারের সকলে তার ২য় বিয়েটি মেনে নিয়ে রিক্তাকে বাড়ি নেওয়ার প্রক্রিয়া করছিল।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাম প্রসাদ ভক্ত বলেন, নিহত রিক্তার সাবেক স্বামী আলমগীরের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার খরিবোনা গ্রামে। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে এবং এ ব্যপারে একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/১০ এপ্রিল, ২০১৮/মাহবুব