বরিশাল নদী বন্দর এখন জাতিসংঘের ‘ছায়া’ সদর দফতরে পরিণত হয়েছে। বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দলের ভক্ত-সমর্থকরা বিভিন্ন অভ্যন্তরীন এবং দূরপাল্লা রুটের লঞ্চে ওইসব দেশের পতাকা টাঙানোয় সৃষ্টি হয়েছে এই অবস্থার। প্রতিযোগিতার শুরুতে এই পরিস্থিতি বিরাজ করলেও দ্বিতীয় রাউন্ডে এসে পাল্টাতে শুরু করেছে সেই চিত্র।
প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেওয়া দলগুলোর পতাকা নামিয়ে ফেলেছেন ভক্ত-সমর্থকরা। তারপরও প্রতিটি লঞ্চে উড়ছে দ্বিতীয় রাউন্ডে ঠাঁই করে নেওয়া দলের রাস্ট্রীয় পতাকা। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি উড়ছে সাবেক দুই বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের পতাকা। একই লঞ্চেও উড়ছে একাধিক দলের পতাকা। শুধু পতাকা উড়িয়েই বিশ্বকাপ উদযাপন করছেন না তারা, বরং প্রতিটি ম্যাচ দেখছেন মনযোগ সহকারে।
সাবেক দুই চ্যাম্পিয়ন দল আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের সমর্থকদের আশা শেষ পর্যন্ত তাদের পছন্দের দলই হবে এবারের চ্যাম্পিয়ন।
সরেজমিন বরিশাল নদী বন্দর ঘুড়ে দেখা যায়, পন্টুনের একপাশে অভ্যন্তরীন রুটের লঞ্চের সারি। অপরপাশে ঢাকাগামী লঞ্চগুলো নোঙ্গর করে রাখা। প্রতিটি লঞ্চেই উড়ছে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার পতাকা। এছাড়া বিভিন্ন স্থান থেকে আসা অভ্যন্তরীন রুটের লঞ্চগুলোতেও দেখা গেছে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার পতাকা। নদী বন্দরে নোঙ্গর করা অভ্যন্তরীন রুটের এমএল আল আফসার লঞ্চের ছাদে উড়ছে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার পতাকা।
এমএল আল আফসার লঞ্চের সুকানী ব্রাজিলের জার্সি পরিহিত মো. আলামিন বলেন, তাদের লঞ্চের মাস্টার জুলফিকার আলী ভুট্টো এবং কারনিক আজিজুল হক আর্জেন্টিনার সমর্থক। অপরদিকে লঞ্চের ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে তিনিসহ ৬ জন ব্রাজিলের সমর্থক। এ কারণে দুই দলের সমর্থকরাই তাদের পছন্দের দলের পতাকা টাঙিয়েছেন লঞ্চের ছাদে। এভাবে প্রতিটি লঞ্চে দেখা গেছে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দলের পতাকা। কোথাও আবার একাধিক দলের পতাকাও রয়েছে।
নদী বন্দরে দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি লঞ্চের ঘাট সুপারভাইজার কবিল ঢালী বলেন, বিশ্বকাপ ফুটবল শুরুর দুই-তিন দিন আগেই নদী বন্দরে এবং প্রতিটি লঞ্চে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দলের পতাকা উত্তোলন করেন ভক্ত ও সমর্থকরা। এ কারণে এক ব্যতিক্রমী এক পরিবেশের সৃষ্টি হয় নদী বন্দরে। প্রথম রাউন্ড শেষে অনেক দল বাদ পড়ে যাওয়ায় ওইসব দগলের সমর্থকরা নিরাশ হয়েছেন। তবে বেশির ভাগ স্থানে শোভা পাচ্ছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পতাকা।
বরিশাল নদী বন্দরের সহকারী বন্দর কর্মকর্তা মো. রিয়াদ হোসেন বলেন, বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর পতাকা উত্তোলন করা না করার বিষয়ে কোনো সরকারী নির্দেশনা নেই। যে যেভাবে পেড়েছে পতাকা টাঙিয়ে বিশ্বকাপ ফুটবলে পছন্দের দলের সমর্থন যোগাচ্ছেন। এতে নদী বন্দরে এক উসৎবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান সহকারী নদী বন্দর কর্মকর্তা রিয়াদ।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম