ইয়েমেন থেকে আনা পবিত্র কোরআন শরিফের ক্ষুদ্র আকারের প্রাচীন কপির সন্ধান পাওয়া গেছে কুমিল্লায়। যার বয়স ৩৫০ বছর বলে ধারণা করা হচ্ছে। বংশ পরম্পরায় এটি কুমিল্লা নগরীর তালপুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা জামিল আহমেদ খন্দকারের (৭৫) কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। কোরআন শরিফটির দৈর্ঘ্য দেড় ইঞ্চি, প্রস্থ এক ইঞ্চি ও পুরুত্ব এক ইঞ্চির চার ভাগের এক ভাগ। ছাপার অক্ষরের কোরআন শরিফটি খালি চোখে পড়া কঠিন। এটি আতশি কাচের নিচে রেখে পড়া যায়। জামিল আহমেদ জানান, তার পূর্বপুরুষরা ইয়েমেন থেকে এ দেশে ধর্ম প্রচারে আসেন। তারা কোরআন শরিফটি সেখান থেকে সঙ্গে এনেছেন বলে ধারণা করছেন। তার বয়স যখন ২১ বছর তখন তার বাবা আবদুল মতিন খন্দকার মারা যান। তাই তিনি কোরআন শরিফটি কীভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারেননি। অনেক গবেষক ও ইতিহাসবিদ কোরআন শরিফটি দেখতে আসেন।
ঐতিহ্য গবেষক আহসানুল কবির বলেন, কুমিল্লা শহরে ৭০০ বছর আগে মুসলিমদের আগমন। তবে মুসলিম সভ্যতার বিকাশ ২৫০ বছর আগে। এখানে মধ্য এশিয়া থেকে বিভিন্ন সাধক পুরুষ ও অনেক সম্ভ্রান্ত পরিবার ইসলাম প্রচারে আসেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নওয়াব বাড়ি, মুন্সী বাড়ি, মৌলভীপাড়া, আলা সাহেব বাড়ি, দারোগা বাড়ি ও মুন্সেফ বাড়ি। তার পথ ধরে এসেছেন শাহ আবদুল্লাহ গাজীপুরী, বোগদাদী হুজুরদের পূর্বপুরুষ, ছাওয়ালপুর পীর সাহেবসহ অন্যরা। ছাওয়ালপুর হাউসের বংশধর জামিল আহমেদ খন্দকার। তাদের পরিবার ইয়েমেন থেকে কুমিল্লায় আসেন ২৫০ বছর আগে। ধারণা করা হচ্ছে তারা ইয়েমেন থেকে কোরআন শরিফটি নিয়ে আসেন। এটি সংরক্ষণ করায় জামিল আহমেদকে ধন্যবাদ জানাই। তার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে। ইসলামি ইতিহাস গবেষক সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে ক্ষুদ্র আকারের কোরআন শরিফ ছাপা বা লেখা হতো না। এ ধরনের কোরআন বিভিন্ন ইসলামিক দেশ থেকে আনা হয়। তবে সেকালের জন্য এটি ক্ষুদ্র আকারের হলেও মুদ্রণশিল্পের উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে এর চেয়েও ছোট আকারের কোরআন শরিফ পাওয়া যায়।