রংপুরের তিস্তা নদীর দুর্গম চরে পুরাতন জেএমবির আস্তানায় অভিযান চালিয়ে জেএমবির চার নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১টি ম্যাগজিন সহ একে-২২ রাইফেল ১টি, ২টি বিদেশী পিস্তল, ৩টি পিস্তলের ম্যাগজিন, ১৫ রাউন্ড একে-২২ রাইফেলে গুলি, ২টি বার্মিজ চাকু ও নগদ ৫৫ হাজার টাকা।
রবিবার দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ইনটিলিজেনন্স শাখা, রংপুর ও লালমনিরহাট জেলা পুলিশের সহযোগিতায় বগুড়ার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এই অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান শেষে সোমবার দুপুরে বগুড়া পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা তার সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এই সব জানান।
অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন পুরাতন জেএমবির রংপুর জেলার দাওয়াহ বিভাগের প্রধান আজহারুল ইসলাম ওরফে ওয়ানুর (৩২), গঙ্গাচরা থানার দাওয়াহ বিভাগের প্রধান আকতারুজ্জামান ওরফে মুকুল (২৬), রংপুর জেলার ইছাবা (সামরিক) সদস্য ফারুক ওরফে সাজু (২২) এবং রংপুর জেলার ইছাবা (সামরিক) সদস্য আব্দুল হাকিম ওরফে মিলন (৩৪)।
সংবাদ সম্মেলন করে বগুড়া পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা বলেন, রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া থানার বাগডহড়া (মিনাবাজার) তিস্তা নদীর দুর্গম চরটি দুর্গম। এই চরটিকে নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়ে পুরাতন জেএমবি সদস্যরা বৈঠক করে আসছিল। গত এক বছর ধরে সেখানে তারা আস্তানা গড়ে তোলে এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
গোপন খবর পেয়ে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান পরিচালনার বিষয়ে কৌশল শুরু করে। জেএমবি সদস্যদের অবস্থান পুলিশ নিশ্চিত হওয়ার পর রবিবার অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানে জেএমবির বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক খোরশেদ আলম ওরফে মাস্টার ওরফে জিয়া ওরফে সামিল, ওরফে উদয় (৩৮) তার চার সহযোগি নিয়ে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃত জেএমবি নেতাদের বাড়ি তিস্তার দুর্গম চড় মিনা বাজার এলাকা হওয়ায় তারা সেখানে মাঝে মধ্যেই তাদের সাংগঠনিক বৈঠক করতো। সেখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জেএমবি সদস্যরা আসতো বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে গ্রেফতারকৃতরা। দুর্গম চর এবং যোগাযোগ বিছিন্ন এলাকা হওয়ায় পুরাতন জেএমবি সেখান থেকে সংগঠিত হওয়ার পাশাপাশি সেখানে জেএমবির প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তোলার পরিকল্পনাও তারা করেছিল। এছাড়াও তাদের সাথে মতবিরোধ হওয়ায় একজন ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যার পরিকল্পনা তারা করেছিল।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, গ্রেফতারকৃতদের নিয়ে রবিবার রাতে বগুড়ায় ফেরার পর সোমবার সকালে তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের কাছে পুরাতন জেএমবি সর্ম্পকে আরো তথ্য পাওয়া যাবে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্ত্তী জানান, বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই ফিরোজ সরকার বাদী হয়ে গ্রেফতার ও পলাতকদের নামে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করেছে। রংপুরের গঙ্গাচড়া থানায় মামলাটি হবে। সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেফতারকৃতদের ১০দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর