ভারতের কলকাতায় থেমে গেছে বাংলাদেশি পর্যটকের পদচারণ। ফলে ধস নেমেছে পর্যটননির্ভর অর্থনীতিতে। তাই বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বিক্রি কমে যাওয়ায় অনেক দোকান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশি পর্যটকের অভাবে বহু হোটেল, দোকান ও শপিং মলের বেচাকেনা কমেছে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে কলকাতার অনেক ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে পড়বেন। তার পরেও তাঁরা শুভদিনের আশায় আছেন। এখনো বাংলাদেশি পর্যটক আগমনের অপেক্ষায় রয়েছেন।
কলকাতা নিউমার্কেটের ‘বোম্ব ড্রাই ফুটস’ বাংলাদেশিদের কাছে চকলেট, বাদাম, মসলা, কসমেটিকস বিক্রি করে। এ দোকানের একসময় ছিল রমরমা ব্যবসা। প্রতিদিন ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ রুপি বেচাকেনা করত। এখন তা নেমে এসেছে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ হাজার রুপিতে। এ দোকানের মালিক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘আমাদের দোকানে আগের মতো বেচাকেনা হয় না। বাংলাদেশি পর্যটক আসা বন্ধ থাকায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের এখন টিকে থাকতেই অনেক কষ্ট হচ্ছে। এখন অপেক্ষায় আছি বাংলাদেশি পর্যটক কখন আসবেন।’ কথা হয়েছে কলকাতার কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তাঁরা জানান, বাংলাদেশি পর্যটক কমে যাওয়ায় বেচাকেনায় ধস নেমেছে। অনেক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। যাঁরা প্রতিষ্ঠান চালু রেখেছেন, তাঁরাও কর্মচারী ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে কলকাতার অনেক ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে পড়বেন। পশ্চিমবঙ্গের প্রাণ কেন্দ্র কলকাতার অর্থনীতি মূলত বাংলাদেশি পর্যটকনির্ভর। তাই কলকাতা শহরজুড়ে গড়ে উঠেছে শত শত হোটেল, লজ, দোকানপাট, শপিং মল। স্বাভাবিক সময়ে নিউমার্কেট, বড়বাজার, গড়িয়াহাট, হাতিবাগানসহ কলকাতার বিভিন্ন এলাকার শপিং মলে বাংলাদেশি পর্যটকের ছিল সরব উপস্থিতি। কিন্তু ভারত সরকারের ভিসানীতি কড়াকড়ির কারণে পাল্টে গেছে সেই চিত্র। কলকাতার অলিগলিতে থেমে গেছে বাংলাদেশি পর্যটকের ঢল। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় নেমে এসেছে সুনসান নীরবতা। কলকাতা চেম্বার অব কমার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউমার্কেট ও বড়বাজারের দোকানগুলোর বিক্রি কমে গেছে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ। চিকিৎসা পর্যটন ক্ষেত্রে ক্ষতি হয়েছে ৫০ শতাংশ। স্বর্ণালংকার ও ইলেকট্রনিক ব্যবসা হ্রাস পেয়েছে ৪০ শতাংশ এবং ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর ব্যবসা কমেছে ৬০ শতাংশ। এ অবস্থা চলতে থাকলে কলকাতার ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হওয়ার শঙ্কা করেছে এ বণিক সংগঠনটি।