দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে পিতা-মাতা হারা এক কওমী মাদরাসার শিশু শিক্ষার্থী শাকিল (১১)। চিকিৎসক বলছেন, শাকিলের সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
গত শুক্রবার সন্ধা ৬টার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের দেবীপুর হাফিজিয়া মাদরাসায় ঘটনাটি ঘটেছে।
নির্যাতনের শিকার শিশু শিক্ষার্থী শাকিল একই এলাকার মহিবুলের ছেলে। শিশু শাকিলের মা সজিনা খাতুন মৃত্যু’র পরে এবং শাকিলের বাবা অন্যত্র বিয়ে করে চলে গেলে, শাকিল একই গ্রামের নানা সাব্দুলের বাড়ীতে থাকে।
শিশু শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা জানায়, দেবীপুর হাফিজিয়া মাদরাসার সহকারী শিক্ষক হাবিব উদ্দিনের ১৫০ টাকা হারিয়ে যায়। ওই টাকা খুঁজে না পেয়ে পিতা-মাতা হারা শিশু শিক্ষার্থী শাকিল নিতে পারে এই সন্দেহে, সহকারী শিক্ষক হাবিব শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় শাকিলকে মাদরাসার ঘরের ভিতর নিয়ে বাশের লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করে।
এই ঘটনা জানতে পেরে শাকিলের নানা একই গ্রামের বাসীন্দা দিনমজুর সাব্দুল মিয়া শাকিলকে নিয়ে এক গ্রাম্য চিকিৎকের নিকট চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। গ্রাম্য চিকিৎসক শাকিলের অবস্থা দেখে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পরামর্শ দেন। শাকিলকে রাতেই ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
শাকিলের নানা সাব্দুল মিয়া বলেন, শাকিলকে তিনি নিজে মানুষ করছেন, তাকে আরবী শিক্ষা দেয়ার জন্য গ্রামের (দেবীপুর) হাফিজিয়া মাদরাসায় দিয়েছেন।
ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফাতেমা বলেন, শিশু শাকিলের শরীরে একাধিক জখমের চিহ্ন আছে এবং ফুলে গেছে। তবে আশঙ্কামুক্ত সে।
একই বিষয়ে দেবীপুর হাফিজিয়া মাদরাসার প্রধান শিক্ষক বায়োজিদ বোস্তামী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন না, ঘটনাটি দুঃখজনক বলে জানান তিনি।
ফুলবাড়ী থানার ওসি শেখ নাসিম হাবিব বলেন, ঘটনার পর থেকে শিক্ষক হাবিব উদ্দিন পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাকে আটক করার চেষ্টা করছে। এরপরে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান