বান্দরবানের লাম উপজেলার ফাইতংয়ে ইউনিয়নে প্রকাশ্যে ইটভাটা তৈরির জন্য ২৪ স্থানে পাহাড় কাটা হচ্ছে। ইতিমধ্যে লামার নবাগত ইউএনও জান্নাত রুমির নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে ৩টি স্থানে অভিযান চালিয়ে পাহাড় কাটার কাজে ব্যবহৃত কয়েকটি বুলডোজার ধ্বংস করে কয়েকজনকে জরিমানা করা হয়েছে। তবে ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে পাহাড় খেকোরা।
স্থানীয়রা জানান, লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের ২৪ টি স্থানে ইট তৈরির জন্য নির্বিচারে পাহাড় কেটে চলছে জসিম উদ্দিন, ফখরুল ইসলাম কবির আহাম্মদ, মো. আবুল খায়ের, ইয়াছির আরাফাত, গিয়াস উদ্দিনসহ অনেকে। পাহাড় কাটার জন্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল, ফকরুল ইসলাম ও কবির আহাম্মদসহ ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে পাহাড় কেটে মাটি পাচার ও ইটভাটার কাজে ব্যাবহার করা হচ্ছে। এদিকে জাতীয়, স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা ও বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে পাহাড় কাটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও পাহাড় কাটা বন্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না জেলা প্রশাসন।
আগস্ট মাসের শুরু থেকেই ইটভাটাসমূহে বুলডোজার ও স্কাভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে ভাটার মাটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
এছাড়াও লামা উপজেলা ফাইতং ইউনিয়নের রাম্যখোলা, শিবাতলী পাড়া, কুইজ্যাখোলা, হরিণ খাইয়া, বড়বিল, বাঙ্গালী পাড়া, গজালিয়া, সরই, ছাগলখাইয়া, হারগাজা, মালুম্যাসহ বান্দরবান সদর, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়িতে অবাধে পাহাড় কাটা চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দা উক্যমং ও হারিছ জানিয়েছেন, একই ইউনিয়নে ২৪টি স্থানে ইটভাটা স্থাপনেরর জন্য পাহাড় কাটা হচ্ছে বিষয়টি আমারা প্রশাসনকে জানিয়েছি।
জেলা প্রশাসক স্থানীয় সাংবাদিকদের অবৈধ ইটভাটা ও পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেও কার্যত এ পর্যন্ত কোন ধরনের ব্যবস্থ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। তবে এর আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বান্দরবান আসনের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর ঊশৈসিং এমপি জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় পাহাড় কাটা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ফকরুল ইসলাম ও কবির আহাম্মদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তারা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে জান্নাত জানিয়েছেন জানিয়েছেন, লামা উপজেলার কোনো ইটভাটার লাইসেন্স নাই। অবৈধ ইটভাটায় পাহাড় কাটার দায়ে সম্প্রতি ৪টি ইটভাটার মালিককে ৮ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অভিযান পরিচালনার বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের এখতিয়ারভুক্ত।
বিডি প্রতিদিন/২ সেপ্টেম্বর ২০১৮/হিমেল