মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে লায়লা আক্তার লিমু হত্যার আলোচিত মামলার প্রধান আসামি খোকনকে গ্রেফতার করেছে শ্রীনগর থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে শ্রীনগর সার্কের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মাকসুদা লিমার নেতৃত্বে ও ওসি মো: ইউনুচ আলীসহ একদল পুলিশ রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গি উপজেলার মনপুর এলাকা থেকে লিমু হত্যার প্রধান আসামি বাবুলের ছেলে ধর্ষক খুনী খোকনকে (৩০) গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারের পর আসামি খোকন স্বীকারোক্তিমূলক ১৬৪ (ধারা) জবানবন্দী দিয়েছে আদালতে।
এ বিষয়ে সোমবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে বাড়ৈখালী বাজারের চান সুপার মার্কেটের পিছনে ইছামতি নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে বাড়ৈখালী গ্রামের মতিনের মেয়ে লিমা আক্তার (১৮) এর লাশ উদ্ধার করে শ্রীনগর থানা পুলিশ। এ ঘটনার পর হতে হত্যা মামলার প্রধান আসামী বাবুলের ছেলে খোকন পলাতক ছিল। ঘটনার পর থেকে পলাতক আসামী গ্রেফতার করার জন্য থানা পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করে আসছিল।
প্রেসব্রিফিংয়ে তিনি জানান, লায়লা আক্তার লিমুকে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক তৈরি করে কাপড় ব্যবসায়ী আসামি খোকন। সেই সুবাধে মেয়েটি ঘটনার দিন দুপুরে খাবার নিয়েও আসে এবং এক সাথে খাবারও খায়। রাতে যখন মার্কেটটি নিরব হয়ে যায় তখান সার্টার বন্ধ করে তারা দুইজনে দোকানের ভিতরে রাতযাপন করে। সেই রাতে খোকন তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় এবং তার স্ত্রী সন্তানের কথা স্বীকার করে। কিন্তু লিমু যখন জানতে পারে খোকন বিবাহিত এবং তার একাধিক সন্তান রয়েছে তখন খোকনকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় সে এবং তার কাছে ত্রিশ হাজার টাকা দাবী করে। দাবীকৃত টাকা না দিলে তার সাথে যা যা হয়েছে সকল কিছু লোকদেরকে বলে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে।
পরবর্তীতে খোকন ও লিমুর মধ্যে হাতাহাতি হয় এক পর্যায়ে গলাটিপে হত্যা করে ফেলে। লিমুর মৃত্যু হয়েছে নিশ্চিত হলে লাশ বস্তাবন্দি করে দুই দিন দোকানের ভিতরেই রাখে। দুর্গন্ধ যাতে না আসে এজন্য খোকান বিলিসিং পাউডার দিয়ে দুর্গন্ধমুক্ত রাখে। পরে লাশ পচে যাওয়া শুরু করলে লাশ গুম করার জন্য বস্তা বন্দি করে ইছামতি নদীর তীরে বস্তাবন্দি লাশ ফেলে দিয়ে আসে। তাতেও তার শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে এসব কাহিনী ধরা পড়ে ধর্ষক ও খুনি খোকন। এবং সে আদালতে তার এই বক্তব্য প্রদান করে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ(প্রশাসন) সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল খন্দকার আশফাকুজ্জামান, শ্রীনগর সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) রাজিবুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুল রায়হান, ডিআই-১ মো: নজরুল ইসলাম, ডিবির অফিসার ইনচার্জ এস.এম আলমগীর হোসেন, এ সময় সিনিয়র সাংবাদিক লাবলু মোল্লা, মাসুদ রানা, মুন্সীগঞ্জ অনলাইন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, সহ- সভাপতি আবু হানিফ রানা, কার্যকরি সদস্য কায়সার সামির, সাংস্কৃতিক বিষয়ক নাজির হোসেনসহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান