ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে মাত্র ২০ দিনের মধ্যে বাবা-মা ও দু’সন্তানসহ একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
সোমবার সকাল থেকে উপজেলা ভান্ডারদহ নয়াবাড়ি গ্রামের প্রায় ৮ জন অসুস্থ হলে তাদের রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শাহজাহান নেওয়াজ বলছেন, Encephalitis(মস্তিষ্কপ্রদাহ) রোগে আক্রান্ত হয়ে এ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এটি প্রথমে মস্তিষ্কে আক্রমণ করে। আক্রান্ত হলে মানুষ দ্রুত সময়ের মধ্যে মারা যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, হাসপাতালে ডা. মোর্শেদ মাসুম বিল্লাহকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি, দ্রুত চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শের জন্য ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি মেডিকেল টিম এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
এ ঘটনার সঠিক কারণ নিরুপণ করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে ৩ জন বিশেষজ্ঞ ও ৩ সহকারী ৬ সদস্যের একটি টিম বালিয়াডাঙ্গীর উদ্দেশ্যে সোমবার সকালে রওনা দিয়েছেন বলে জানান তিনি। তারা রংপুর হাসপাতালে মৃত মেহেদীর মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করবেন।
এলাকাবাসী জানায়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি নয়াবাড়ি গ্রামের ফজর আলীর ছেলে তাহের আলী (৫৫) রহস্যজনকভাবে মারা যায়। এ ঘটনার ১১ দিন পর ২০ ফেব্রুয়ারি একইভাবে মারা যান জামাতা হাবিবুর রহমান (৩৫)। পরের দিন মারা যান তাহের আলীর স্ত্রী হোসনে আরা (৪৫)। এর দু’দিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি তার দুই ছেলে ইউসুফ আলী (৩০) ও মেহেদী হাসানও (২৪) মারা যান।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলেন, এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত ইউসুফ আলীর স্ত্রী কোহিনুর, তার কন্যা সন্তান তার শ্বশুড়কে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে গতকাল রাতেই রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তহিদুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার মোতালেব এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। তাদেরকেও রংপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, বিষয়টি প্রশাসন অতি গুরুত্বের সাথে দেখছে। আমরা আশা করছি, ঢামেক থেকে মেডিকেল টিমটি এলাকায় আসলেই রোগটি সনাক্তসহ এর প্রতিকার জানা সম্ভব হবে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার কর্মকর্তাসহ সকলকে নিদের্শনা প্রদান করা হয়েছে। এ ধরনের কোন রোগী আক্রান্ত হলেই তাদের দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রেরণ করার জন্য।
এ ছাড়াও ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখে মাক্স পড়ে এলাকায় থাকার জন্য চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা