নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সোনাকান্দায় দিনে দুপুরে প্রবাসীর স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত রবিবার দুপুর দেড়টায় সন্দেহভাজন আসামি শাহ আলম প্রকাশ সাগরকে (৪৫) সোনাকান্দা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আসামী শাহ আলমকে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিল্টন খন্দকারের আদালতে প্রেরণ করে পিবিআই। শুনানী শেষে বিচারক তার ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের শিকার নাইমা রহমানের স্বামী বিদেশ থাকার সুবাদে তার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করে শাহ আলম। পরবর্তীতে নিজের সন্তানের কথা চিন্তা করে সম্পর্ক ছিন্ন করে নাইমা। এসময় শাহ আলম তার সঙ্গে বিভিন্ন অন্তরঙ্গ মুহূর্তের তোলা চিত্র ভিকটিমের আত্মীয় স্বজন ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সামনে প্রকাশের হুমকি প্রদান করে। যার প্রেক্ষিতে ভিকটিমের পিতা স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করেন।
ঘটনার এক সপ্তাহ পূর্বে শাহ আলম তার ব্যবহার করা নাম্বার বন্ধ করে রাখে এবং ঘটনার ২ দিন পর পুনরায় চালু করে। এসময় এলাকায় পুলিশের উপস্থিতি দেখে সে আড়ালে চলে যায়। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পরকীয়া সম্পর্ক ও হুমকির কথা স্বীকার করলেও কৌশলে হত্যার কথা এড়িয়ে যায় সে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি দুপুরে উপজেলা সোনাকান্দা এলাকার ত্রিবেনী পুল সংলগ্ন আমিনুল হক মনার মালিকানাধীন মাবিয়া ভবনের দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটে নাঈমা রহমানকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তার মেয়ে বাসায় ঢুকে মায়ের শরীরে আগুন দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে। ওই ঘটনায় বন্দর থানায় নিহতের ভাই বাদি হয়েছে মামলা দায়ের করে।
তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানায়, নিহতের মাথায় ৫ থেকে ৬টি ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে আলামত নষ্টের জন্য গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি মানিব্যাগ ও সিগারেট পাওয়া যায়। উদ্ধারকৃত মানিব্যাগে অজ্ঞাত এক যুবকের ছবি ও সিগারেটের সূত্র ধরে খুনীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চালায় তদন্তকারী কর্মকর্তারা। পরবর্তীতে মামলাটি পিবিআই'র নিকট হস্তান্তর করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর