ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার পূর্ব নড়াইল তালীমুল কুরআন মাদরাসা ও এতিমখানা সংলগ্ন গার্জিয়ান খালে ৫০ বছরেও নির্মিত হয়নি একটি কালভার্ট। এই স্থান দিয়ে নড়াইল, মাছাইল, কুমুরিয়া, টঙ্গীরঘাট ও স্বদেশীসহ প্রায় ৭-৮ গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকেন।
খালটির উত্তর পাশে পূর্ব নড়াইল দাখিল মাদরাসা, পূর্ব নড়াইল তালীমুল কুরআন মাদরাসা ও এতিমখানা, জামে মসজিদ, ঈদগাহ ময়দান, ৮নং নড়াইল ইউনিয়ন কমপ্লেক্স, বহুতল বিশিষ্ট হাসপাতাল, ভূমি অফিস ও একটি বাজার অবস্থিত। এসব প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, মুসল্লি, শিশু ও রোগীসহ প্রতিনিয়ত কয়েকশ লোক এই পথ দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। বহু বছর পর্যন্ত সাঁতরিয়ে, কলা গাছের ভেলা দিয়ে ও কাপড় ভিঁজিয়ে পারাপার করছিলেন এলাকাবাসী।
গত কয়েক বছর আগে স্থানীয়রা মিলে বাঁশ-কাঠ সংগ্রহ করে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে একটি সাঁকো নির্মাণ করেন। বর্তমানে এটাও বাঁশ পঁচে, ভেঙে নড়বড়ে ও চলাচলে অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। মাত্র ৮-১০ হাত প্রশস্থ এই খালটিতে একটি কালভার্ট না থাকায় ইতোপূর্বে প্রাণহানিসহ অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, গত কয়েক বছর আগে এই খালটি পার হওয়ার সময় জাফর নামে এক প্রতিবন্ধীর মৃত্যু হয়েছে। সে সাঁতরে খাল পার হওয়ার সময় ডুবে মারা যায়। জাফর উপজেলার খন্দকপাড়া গ্রামের মেনুর ছেলে। এই খালের দক্ষিণপাড়ে তার নানার বাড়ি। জাফরের মা জাহেরা খাতুনের সাথে নানার বাড়ি বেড়াতে আসলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জাহেরা খাতুন বলেন, একটি কালভার্ট থাকলে হয়তো আমার ছেলে এভাবে মরতো না। একটি কালভার্টের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমার ছেলের মতো আর কারো ছেলে-মেয়ের যাতে এভাবে মরতে না হয়। এজন্যে আমি এই খালে একটি কালভার্টের দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় পাশের বাড়ির ফরিদা খাতুন জানান, ভাঙা বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হওয়ার সময় পিছলিয়ে পরে কোমড়ের ব্যথা তিন বছরেও ভাল হয়নি। মাদরাসার কয়েকজন ছাত্রও লজিং বাড়ি থেকে খানা আনতে গিয়ে পারাপারের সময় ব্যথা পেয়েছেন বলে জানান।
মৃত সমেদ আলী ফকিরের ছেলে হাছেন আলী ফকির আওলিয়া বলেন, দেশ স্বাধীনের কয়েক বছর আগে আমরা এই খালের দক্ষিণ পাশে এসে বসতি স্থাপন করি। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে কষ্ট করে চলাচল করলেও আজো এই খালে আমাদের ভাগ্যে জুটেনি একটি কালভার্ট।
রাজমিস্ত্রি রফিকুল ইসলাম বলেন, এখানে একটি কালভার্ট নির্মিত হলে প্রায় ৭-৮ গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ কমবে এবং যাতায়াত সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।
এ বিষয়ে হালুয়াঘাট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি দ্রুত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করুন। এমপি সাহেবের নির্দেশে তালিকা হচ্ছে।
পরে আব্দুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার আর হবে না। পরে একটা দরখাস্তসহ যোগাযোগ করবেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন