নাটোরে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। নাটোর ও নলডাঙ্গা উপজেলার দুটি পৌরসভা এবং ১২টি ইউনিয়নে সম্মেলনকে ঘিরে পদ প্রত্যাশীরা মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
দীর্ঘদিন পর সম্মেলনকে ঘিরে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে উৎসবের আমেজ। তবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক হেভি-ওয়েট প্রত্যাশী থাকায় সিদ্ধান্ত নিতে বেগ পেতে হচ্ছে নীতিনির্ধারকদের। এদিকে পদপ্রত্যাশীরা নিজের অবস্থান তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দিচ্ছেন নানা স্ট্যাস্টাস। কেউ কেউ ফেসবুকে লাইভেও আসছেন। তুলে ধরছেন তাদের অতীত কর্যক্রমের ফিরিস্তি।
এছাড়াও তারা জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন। এরই মধ্যে সরগম হয়ে উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতি। অনেকেই বলেছেন, এবার থানা কমিটিতে আসছে চমক। চলছে নানা হিসেব নিকেশ। ছিঁটকে পড়তে পারেন পুরাতন অনেকেই। তবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে আগ্রহের যেন কমতি নেই। এদিকে, বিভিন্ন ইউনিটের কর্মীদের নিয়ে নিয়মিত বৈঠক শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা। বিত্তবানদের ড্রয়িং রুম থেকে শুরু করে চায়ের দোকান পর্যন্ত চলছে এর জল্পনা-কল্পনা। ছবি দিয়ে নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচারণা চালাচ্ছেন কর্মীরা। বিগত দিনে দলের জন্য তাদের অবদান ও ত্যাগের কথাও তুলে ধরছেন কেউ কেউ। এসময় দলের দুর্দিনে বিভিন্ন মিটিং, মিছিল ও আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণের ছবি ও তথ্য যোগ করছেন। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলের মামলা হামলা, কারাবরণের তথ্য-উপাত্ত এবং পারিবারিক সাংগঠনিক ঐতিহ্যও তুলে ধরছেন। আবার পছন্দের পদ পেতে ঊর্ধ্বতন নেতাদের বাসা ও অফিসে ভিড় জমাচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা।
নাটোর সদর আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, আমি আমার কোনো সিদ্ধান্ত কারো উপরে চাপিয়ে দিবো না কখনোই। সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক মডেল হিসেবেই নাটোরে তৃণমূল থেকে পৌর , ইউনিয়ন উপজেলার রাজনীতি নির্ণয় কবরে দলের কাউন্সিলররাই। তবে কাউন্সিলরদের প্রতি আমার নির্দেশনা থাকবে তারা যেন কোন সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, নব্য আওয়ামী লীগারকে দলের পদে অন্তর্ভুক্ত না করে। আর এমনটি করলে আমি নিজে সেই নাম কেটে দিব। ইতিমধ্যে ওয়ার্ড শেষে আসন্ন ইউনিয়ন সম্মেলনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ মোর্ত্তজা আলী বাবলু বলেন, ইউনিয়ন সম্মেলনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে। এরই মধ্যে মাঠ পর্যায়ে দিক নির্দেশনা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে পৃথক সভা হয়েছে। অনেক ইউনিটে সম্মেলন হয়েও গেছে। বাকিগুলো খুব কম সময়েই সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।
শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আহম্দে মুকুল বলেন, সাংসদ শিমুলের নেতৃত্বে আগেকার যে কোন সময়ের চেয়ে নাটোরে আওয়ামী লীগ আরোও শক্তিশালী এবং সুসংগঠিত। তাই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নাটোরের প্রতিটি এলাকার নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণ ফিরে এসেছে। সর্বত্রই চলছে কমিটি নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা। দলের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছেন, দুর্দিনে দলের সঙ্গে ছিলেন- এমন নেতারা বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃত্বে আসছেন বলে জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার