১৯ অক্টোবর, ২০১৯ ১৬:৪৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদকসেবীর হুমকিতে স্কুল ছাত্রীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদকসেবীর হুমকিতে স্কুল ছাত্রীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ

প্রতীকী ছবি

মাদকসেবীর কাছে আমার মেয়েকে আমি বিয়ে দিবো না। এছাড়া আমার মেয়ের বিয়ের বয়সও হয়নি। কিন্তু তারা (ছেলে পক্ষ) আমার মেয়েকে জোর করে বিয়ে করিয়ে নিতে চায়। বিয়ে না দিলে মেরে ফেলবে বলেও হুমকি দিচ্ছে। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ভুক্তভোগী এক মা। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার দক্ষিণ মৌড়াইলের ওই নারী আজ শনিবার দুপুরে জানালেন, মেয়েকে নিয়ে তিনি বিপাকে আছেন। মেয়ের সঙ্গে ওই ছেলের ছবি যুক্ত করে ফেসবুকে ছবি ছড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে গিয়ে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও সুরাহা পাননি। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় দুইদিন আগে তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর আগে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এর কাছেও তার মেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন

অভিযোগ সূত্রে ও কথা বলে জানা গেছে, আখাউড়া পৌর এলাকার বাসিন্দা ওই নারী দুই মেয়ে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। স্বামীর সঙ্গে ওই নারীর বনিবনা নেই। তার বড় মেয়ে ২০১৮ সালে নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ছাতিয়ানের আলী আকবের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ আল-মামুন কুপ্রস্তাব দিত। এক পর্যায়ে বিয়েরও প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আব্দুল্লাহ মাদকাসক্ত হওয়ায় তিনি বিয়ে দিতে রাজি হননি। এক পর্যায়ে আব্দুল্লাহর হুমকির মুখে মেয়েটি স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দেন। কিন্তু এতেও পিছু ছাড়েনি আব্দুল্লাহ। বিভিন্ন সময়ে আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে সে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় এখন অকথ্য ভাষায় গালাগাল করাসহ অশ্লীল ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেন। এমনকি গত ১০ অক্টোবর আব্দুল্লাহ তার মোবাইল ফোন থেকে ঝুমুর বেগমের মোবাইল ফোনে অশ্লীল ছবি পাঠিয়েছে বলেও জানা যায়। 

এ অবস্থায় গত ১৭ অক্টোবর থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এতে আব্দুল্লাহর বাবা ও মা, সহযোগি অনিক, অয়ন, ওই নারীর বোন নুপুর বেগমসহ সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। তবে আজ শনিবার দুপুর নাগাদ অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি। 

অভিযোগ দাখিলকারি ওই নারী জানান, এর আগে তার মেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর অভিযোগ দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাএ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে থানায় মামলা দায়ের করার পরামর্শ দেন। পুলিশের সঙ্গে এ নিয়ে তিনি কথা বলবেন বলেও জানান। 

আব্দুল্লাহ আল-মামুন এসব অভিযোগ মোবাইল ফোনে অস্বীকার করে বলেন, ওই মেয়ের সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবে বিয়ের আলাপ চলছিল। মেয়ের পরিবার ১০ লাখ টাকা কাবিন করানোর কথা বলায় বিয়ে হয়নি। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সেলিম উদ্দিন আজ শনিবার দুপুরে বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এক এস.আই কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।    


বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর