পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামের গৃহবধূ আশা হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে গোপালনগর গ্রামের কয়েক শত লোক রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই কর্মসূচি পালন করেন।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ৪ বছর আগে পার্শ্ববর্তী গোলকাটা গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী সফর আলীর সাথে বিয়ে হয় গোপালনগর গ্রামের আশা খাতুনের। সম্প্রতি শ্বশুর বাড়িতে থাকা অবস্থায় গত ৩ অক্টোবর পরিকল্পিতভাবে আশা খাতুনকে 'মারপিট করে জোড়পূর্বক মুখে বিষ ঢেলে' হত্যা করা হয়।
খবর পেয়ে আশার বাবার বাড়ির লোকজন ওই বাড়িতে গিয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ৪ অক্টোবর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশা মারা যান।
আশার বাবা জাহিদুল ইসলাম বাবু ও মায়ের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে উৎকোচের বিনিময়ে উল্টো আশার বাবার বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। পরে জামিনে বের হয়ে গত ২৮ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) আশার বাবা জাহিদুল ইসলাম বাবু বাদী হয়ে পাবনার আমলি আদালতে ৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ বিচারক মো. মুরাদ জাহান মামলাটি গ্রহণ করে তা তদন্তের জন্য ফরিদপুর থানায় পাঠালেও পুলিশ মামলাটি আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ স্বজনদের।
আশা হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের জন্যে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও গ্রামবাসী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অনুরোধ করলেও তোয়াক্কা করেন নাই।
ফরিদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আশরাফুল কবিরসহ বিক্ষুব্ধরা অবিলম্বে ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেমের অপসারণ দাবি করেন এবং আশা হত্যার বিচার দাবি করেন।
এ সময় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, বনওয়ারীনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজাহার আলী সরকার, সাধারণ সম্পাদক আলী সরকার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শাহাদত হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল আলম, বনওয়ারীনগর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান প্রমুখ।
এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনাটি অস্বীকার করেন এবং এই আশা নামে কেউ হত্যার শিকার হয়নি বলেও জানান। তার বিরুদ্ধে অপসারণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লোকজন বলতেই পারে এখানে আমার কিছুই করার নেই।
এ বিষয়ে পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বিপিএম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, খোঁজ নিয়ে গুরুত্বের সাথে তদন্তের জন্যে ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম