সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে ২৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ ও সংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কাজের সাথে লিপ্ত থাকার অভিযোগে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিককে সাময়িকভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। একই সাথে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহীদের চলতি মাসের ১৮ তারিখের মধ্যে সংগঠনের দফতর সেল বরাবর জীবনবৃত্তান্ত পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, জেলা পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে গত ৩১ অক্টোবর বিকাশের টাকা সংগ্রহকারী আশিক আল ইমরান ও তানভির ইসলাম সাতক্ষীরার একটি ব্যাংক থেকে ২৬ লাখ টাকা নিয়ে বিকাশ এজেন্টদের দিতে শ্যামনগরে যাচ্ছিল। কালিগঞ্জ উপজেলার পাওখালী এলাকায় পৌঁছালে দুটি মোটরসাইকেলে তিন তিন ছয়জন এসে ফাঁকা দুই রাউন্ড গুলি ছুড়ে তাদের গতিরোধ করে। পরে তাদের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ২৬ লাখ টাকা ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান কালিগঞ্জ থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশকে অপরাধিদের গ্রেফতারে মাঠে নামান। পুলিশের দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর সাতক্ষীরা শহর থেকে ২৮ নভেম্বর রাতে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমান সাদিকের দুই সহযোগী ছাত্রলীগ কর্মী মামুনুর রহমান দিপ ও সাইফুল রহমান এবং শহরের মেহেদিবাগ থেকে সামি হাসান ওরফে সোহাগকে সন্দেহভাজন হিসাবে গ্রেফতার করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে আসে ছিনতাইয়ের ঘটনার মূল কাহিনী। এঘটনার পর ৩০ নভেম্বর দীপ ও সাইফুলকে নিয়ে অস্ত্র ও ছিনতাই হওয়া টাকা উদ্ধারে যায় পুলিশ। রাত ৩টার দিকে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কের কামাননগর এলাকায় পৌঁছাতেই পুলিশের উপর গুলি বর্ষণ করে তাদেরকে ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করে তাদের সহযোগীরা। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টাগুলি চালায়। গোলাগুলির মাঝখানে পড়ে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় ছাইফুল ও দীপ। পরে সেখান থেকে পুলিশ দুটি বিদেশি অস্ত্র, গুলি ও দুটি চাকু এবং একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে।
ঘটনার পরের দিন জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মুস্তাফিজুর রহমান। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বিস্তারিত ঘটনা তুলে ধরে বলেন সন্ত্রাসীরা ছিনতাই হয়ে যাওয়া ২৬ লাখ টাকার ২২ লাখ টাকা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমানের হাতে তুলে দেন।
পুলিশ সুপার জানান, এঘটনায় অস্ত্রসহ সাদেক পালাতক রয়েছে। ঘটনায় জড়িত ৯ জনের মধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান ও সাইফুল মাস্টারমাইন্ড হিসাবে কাজ করে। সাদিকের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা হয়। ঘটনার পর থেকে সাদিক আত্মগোপনে রয়েছে। গত ৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শহরের মুনজিতপুরের সাদিকের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম