গ্রামের মানুষের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সড়কবিহীন ব্রিজ-কালর্ভাট। নেত্রকোনার মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের তিয়শ্রী গ্রামের মানুষের অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে এলজিইডি বাস্তবায়িত সড়কবিহীন ব্রিজ-কালর্ভাটগুলো। মদন ফতেপুর সড়কের প্রায় ৫ থেকে ৭ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে ৭ টি কালর্ভাট। ১৯৯১ সনের দিকে ব্রিজ হলেও হয়নি আজও সড়ক। এগুলোর খোঁজ রাখে না কেউ। ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার পথ অন্য সড়ক দিয়ে ঘুরে চলাচল করতে হয় কয়েকটি গ্রামের মানুষকে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নেত্রকোনা জেলার হাওরাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা মদন। ২২৫.৮৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুরে ৮ টি ইউনিয়ন নিয়ে অবস্থিত উপজেলার অধিকাংশই বর্ষায় থাকে পানির নীচে। ৬৮০ ঘনত্বের এই উপজেলার মোট ১৫৪৪৭৯ জনসংখ্যার মধ্যে কৃষকের সংখ্যাই বেশি। এই এলাকার প্রধান ফসল হচ্ছে ধান। আর এই হাওরাঞ্চলের একটি মাত্র ফসল হয় শুকনো মৌসুমে। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থা ব্রিটিশ আমলের পর থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশত বছরেও একই রকম।
কোন উন্নয়ন নেই। বরং কিছু কিছু এলাকায় উন্নয়নের নামে লুটপাটের কাজের খেসারত দিতে হচ্ছে আপামর জনসাধারনকে। তিয়শ্রী ইউনিয়নের মদন ফতেপুর তিয়শ্রী গ্রামীণ প্রায় ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার সড়ক যেনো কৃষকসহ এলাকাবাসীর বিষফোঁড়া।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৯১ সনে সড়কটিতে বেশ কয়েকটি ব্রিজ ও কালর্ভাট নির্মাণ হলেও আজো নির্মিত হয়নি সড়ক। অল্প দূরত্বের সড়ক রেখে কৃষকদের ধান আনা-নেয়াসহ চলাচল করতে হয় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার বাড়তি পথ ঘুরে। এই ভোগান্তি যেনো শেষ হবারই নয়। এলজিইডির বাস্তবায়নে নির্মিত ব্রিজ কালর্ভাটগুলো ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ছে। সড়কটি জঙ্গলে পরিণত হয়েছে।
এলাকাবাসী ও কৃষকরা বলছেন এই বিজ্র কালর্ভাট না থাকলে তাদের জন্য ভালো হতো। ধান নিয়ে পায়ে হেঁটে হলেও চলাচল করা যেতো। কিন্তু ব্রিজ কার্লভাটের কারণে সড়কে উঠানামাই করা যায় না। সেখানে ধান নিয়ে চলাচলের তো প্রশ্নই আসে না।
স্থানীয় মো. শাকের নামের এক ব্যক্তি বলেন, একটি সড়কে ৭ টি ব্রিজ কালর্ভাট থাকায় এলাকাবাসী এখন ক্ষুব্ধ। চার থেকে পাঁচটি গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও কোন কাজ করাতে পারছেন না। ব্রিজ করে বসে আছে, অথচ সড়ক নেই। ব্রিজে যদি সড়কের ডাইভার্সনটাও করে দিতো তাহলেও অন্তত সড়ক দিয়ে হেঁটে মানুষ চলাচল করতে পারতো।
এদিকে এ ব্যাপারে কথা বলতে দুদিন নেত্রকোনা এলজিইডি ভবনে ঘুরে ফোন করেও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামানকে পাওয়া যায়নি।সহকারী প্রকৌশলী পরিতোষ দাস জানান, তিয়শ্রীর এই ৫ কিলোমিটার সড়কে মাত্র দুটি কালর্ভাট। কোন ব্রিজ নেই। এটি একটি গ্রামীন সড়ক বলে বিষয়টিকে তিনি উড়িয়ে দেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল