২০ জানুয়ারি, ২০২০ ১৪:২৯

বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে লক্ষ্মীপুরে কিশোর নির্যাতন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে লক্ষ্মীপুরে কিশোর নির্যাতন

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদ দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নিরব হোসেন নামে (১৬) এক কিশোরকে মারধর করাসহ জুতার মালা গলায় পড়িয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। বর্তমানে দোকান কর্মচারী ওই কিশোরকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ভিকটিমের শ্রমের টাকা না দিয়ে তাকে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীসহ পরিবার। 

এ ঘটনায় সোমবার ভুক্তভোগীর নানি বাদী হয়ে সদর থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এদিকে ঝাড়ু ও জুতার মালা গলায় পড়িয়ে কিশোরকে এলাকায় ঘুরানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন ভাইরাল। সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্নসহ এ ঘটনায় মানবাধিকার লংঘিত হয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, গেলো শনিবার বিকালে নিজ কর্মরত দোকান থেকে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয় ১৬ বছর বয়সী কিশোর নিরব হোসেনকে। শুধু তাই নয় তার গলায় ঝাড়ু ও জুতার মালা পড়িয়ে নির্যাতন করা হয়। সেই নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও তুলে ছেড়ে দেয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। যা এখন ভাইরাল। এখানেই শেষ নয় নির্যাতনের পর তাকে থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ২ নং ওয়ার্ডের জালালিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায়।

শুধু তাই নয় পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছাড়িয়ে এনে দোকান (চামড়ার দোকান) মালিক শালিসি বৈঠকের আয়োজন করেন। এতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ মাতব্বররা ওই কিশোরকে দোষী সাব্যস্ত করে তার (কিশোরের) জরিমানা করেন ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু এতিম ওই কিশোরের দায়িত্ব নিতে রাজি হননি নানা ও নানি। এতেই হট্টগোল শুরু হয়ে আবারও মারধর করা হয় তাকে। 

রবিবার রাত ৯টায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ভুক্তভোগী কিশোরকে। সোমবার সকালে ভুক্তভোগীর নানি আলেয়া বেগম থানায় অভিযোগ করেন।

জানা যায়, ৬ মাস ধরে স্থানীয় রাশেদের চামড়ার দোকানে কাজ করতেন মৃত কিরণ হোসেনের ছেলে নিরব হোসেন। এরই মধ্যে তার মাকেও হারান সে। দোকানে মাসিক শ্রমের টাকা পায়নি না বলে অভিযোগ তার। খোঁজাখুজির পরও দোকান মালিক রাশেদের কাছ থেকে মিলেনা পারিশ্রমিক। তাই বাধ্য হয়ে মালিকের অগোচরে নিজের পাওনা টাকাই নেন বলে দাবী করেন ওই কিশোর। 

তবে দোকান মালিক বলছেন, চুরি করে তার মূলধন আত্মসাৎ করায় নিজেসহ এলাকাবাসী তাকে শাস্তি হিসেবে ঝাড়ু ও জুতার মালা পড়িয়ে দেন।
পরে শালিসি বৈঠকে স্থানীয় কাউন্সিলর ও মাতাব্বররা তার ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তবে কাউন্সিলর শিপন ও সালিশদার ইসমাইল ঝাড়ু ও জুতার মালা পড়িয়ে দেয়ার ঘটনা সম্পর্কে অবহিত নন বলে দায় এড়াতে চান। এদিকে এ ঘটনার বিচার দাবী করেন নানি আলেয়া বেগমসহ সচেতন মহল।

এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি (তদন্ত) মোসলেহ উদ্দিন জানান, নির্যাতনের অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর