দুর্ঘটনা নয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ছিনতাইকারী চক্রের হাতেই খুন হয়েছেন মোক্তার হোসেন সৈকত। তিনি লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার দেওপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল ওয়াহেদের ছেলে। প্রথমে এটি সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে থানায় জিডি হলেও পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে ১৬ দিনের মধ্যে এ খুনের রহস্য বেরিয়ে আসে। এ ঘটনায় পিবিআই তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে।
শনিবার গ্রেফতারকৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। সৈকতকে গাড়িতে তুলে মারধরের পর লাথি দিয়ে রাস্তায় ফেলে ওই গাড়ি দিয়ে চাপা দেয় ছিনতাইকারীরা।
একই দিন প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন জেলা পিবিআই প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ওসমান গনি।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- ফেনীর সদরের নোয়াবাদ গ্রামের আবুল হাসনাত ওরফে তারেক (২৮), দক্ষিণ শর্শদি গ্রামের সৈয়দ হাফিজুর রহমান সাইফুল (২৬) ও কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বাতাখালী গ্রামের মো. রাসেল (১৯)।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ২১ জানুয়ারি ভোর সাড়ে ৪টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিরশান্নী বাজার এলাকা থেকে মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা মাথা ও মুখমণ্ডল থেতলানো অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা ছিল এটি সড়ক দুর্ঘটনা। খবর পেয়ে পিবিআই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশনের মাধ্যমে লাশের পরিচয় শনাক্ত করে। এসময় লাশের বা হাতের কবজিতে কাটা দাগ দেখে এটি হত্যাকাণ্ড হিসেবে ধরে নিয়ে তদন্ত চালায় পিবিআই। এরপর পিবিআই তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার ১৬ দিনের মধ্যে তারেক, সাইফুল ও রাসেলকে গ্রেফতার করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ওসমান গনি জানান, ‘জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে- তারা মহাসড়কে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। গত ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তারা একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা-মেট্রো গ-২৯-৩৫৯৪) ভাড়া নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বের হয়। ওই রাতে তারা ফেনী থেকে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার পর্যন্ত মহাড়কের কয়েকটি স্থানে টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করে। পরে ফেনী ফেরার পথে রাত দেড়টার দিকে চৌদ্দগ্রামের মিরশান্নী বাজার এলাকায় সড়কের পাশে সৈকতকে হাঁটতে দেখে। তাকে প্রাইভেটকারে তুলে নেয়। মারধর করে মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নিয়ে লাথি মেরে সড়কে ফেলে দিয়ে গাড়ি চাপায় হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সুমন মিয়া রিপন চৌদ্দগ্রাম থানায় হত্যা মামলা করেন। গ্রেফতারকৃতরা শনিবার আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তাদেরকে কুমিল্লা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।’
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন