গাজীপুরের শ্রীপুরে অসুস্থতার কারণে কাজে না যাওয়ায় দিনমজুর মফিজ উদ্দিনকে (৫৫) পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। মফিজ উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের ডুমবাড়িচালা গ্রামের মৃত হজরত আলীর ছেলে। গত ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ডুমবাড়িচালা গ্রামের (উত্তরপাড়া) রশিদের মুদির দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দিমজুরের ছেলে রুহুল আমীন বাদী হয়ে কৃষক আকরাম হোসেনকে অভিযুক্ত করে ঘটনার পরের দিন সকালে শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযুক্ত কৃষক আকরাম হোসেন পাশের কাওরাইদ ইউনিয়নের বিধাই গ্রামের আব্দুছ সাত্তার মিয়ার ছেলে।
দিনমজুর মফিজ উদ্দিন জানান, চোখে অসুস্থবোধ করায় আমি কাজে যাইনি। এতে মহাজন আকরাম ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে পিটিয়ে আহত করে। পরে স্বজনেরা তাকে রাতেই শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রাখে। আমার ছেলে থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ কৃষককে আটক করে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর কোন বিচার পাইলাম না। উল্টো আকরাম থানা থেকে ছাড়া পেয়ে আমাকে হুমকি দিচ্ছে।
মহাজন আকরাম হোসেন জানান, মফিজ উদ্দিন আমার জমিতে কাজ করার কথা দিয়েও আসেনি। রশিদের দোকান পারে গিয়ে মফিজকে পেয়ে কাজে না আসার কারণ জিজ্ঞাসা করি। এসময় সে আমার উপর চড়াও হয়ে গালিগালাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়ে গেলে মফিজের নাকের উপর আমার হাতের আঁচড় লাগে।
তিনি আরও বলেন, মফিজ থানায় আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। ৭ ফেব্রুয়ারি শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল সাকিব, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার তারেক হাসান বাচ্চু বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছে। কোন আটকের ঘটনা ঘটেনি।
তবে আকরাম হোসেনের স্ত্রী বলেছেন, এসআইকে তিন হাজার টাকা দিয়ে আমার স্বামীকে ছাড়িয়েছি।
স্থানীয় শফিকুল ইসলাম জানান, মফিজ উদ্দিন এ গ্রামের অনেকের কৃষি জমিতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করে। সে অসুস্থ হয়ে পড়লে কাজে যাওয়ার কথা দিয়েও আকরাম হোসেনের জমিতে কাজ করতে যায়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আকরাম শনিবার সন্ধ্যায় রশিদের দোকানের সামনে মফিজকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে আহত করে। এর আগেও দিনমজুরকে আরও দুই বার মারধর করেছে আকরাম হোসেন। এ ঘটনায় সুষ্ঠ বিচার হওয়া দরকার ছিল।
আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান জানান, পুলিশ আসার পর আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তবে আকরাম মফিজকে কয়য়েকটা চড় থাপ্পড় মেরেছে। বিষয়টি মামলায় না গিয়ে স্থানীয়ভাবে সমধান করে দেওয়া হবে। আমি ব্যস্ততার কারণে বসতে পারিনি। দুই এক দিনের মধ্যেই উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধান করে দিব।
তেলিহাটি ইউনিয়নের স্থানীয় মেম্বার তারেক হাসান বাচ্চু জানান, আমি ঘটনার বিষয়টি ফোনের মাধ্যমে জানতে পারি। বিষয়টি যেন স্থানীয়ভাবে বসে মিমাংসা করে দেওয়া হয়।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল সাকিব জানান, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য তারেক হাসান বাচ্চু ও আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান বসে স্থানীয়ভাবে সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দিলে অভিযুক্ত আকরাম হোসেনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আমি কারও কাছ থেকে টাকা নেইনি। টাকা নিয়ে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগও সত্য নয়।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা