নড়াইলের পল্লীতে প্রতিপক্ষরা শত্রুতার জেরে মঙ্গলবার গভীর রাতে একটি পানের বরজে দ্বিতীয় বারের মত আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগুনে পান ও বরজ পুড়ে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন বরজের মালিক প্রভাষ দাস (৫৫)।
ঘটনাটি ঘটেছে জেলার কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার মাউলী ইউনিয়নের গন্ধববাড়িয়া গ্রামে। পানের বরজের মালিক প্রভাষ দাস ও তার স্ত্রী বন্দনা দাস হাউমাউ করে কেঁদে বলেন, আজ পথের ফকির হয়ে গেলাম। কলেজ পড়ুয়া ছেলে এবং পরিবার-পরিজনের ব্যয়ভার নির্বাহের কোন উপায় থাকলো না।
পানের বরজের মালিক প্রভাষ দাস জানান, ‘লোন নিয়ে প্রায় ৬ বছর আগে প্রায় ৩০ শতক জমিতে বরজ তৈরি করে পান চাষ শুরু করি। চাষের দু’বছরের মাথায় আজ থেকে চার বছর আগে গ্রামের প্রতিপক্ষরা বরজের একাংশের পান গাছের শিকড় তুলে ফেলে এবং বরজ ভেঙে ক্ষতি সাধন করে। শুধু পানের বরজের ক্ষতিসাধন করেই ক্ষান্ত হয়নি প্রতিপক্ষরা আমার পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে।’
তিনি আরও জানান, তিনি হুমকির ভয়ে গত ৪ ডিসেম্বর প্রভাষ দাস একই গ্রামের সঞ্জয় দাস, সুব্রত দাসসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে নড়াগাতি থানায় একটি জিডি দায়ের করেন। এরপর চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি গভীর রাতে প্রতিপক্ষরা পানের বরজে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও সেসময় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। বিষয়টি নিয়ে মাউলী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল আলম, জেলা পরিষদের সদস্য মো. হাদিউজ্জামান, ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বর মো. জাকারিয়া শেখসহ গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে স্থানীয়ভাবে সালিশি মীমাংশা হয়। তখন আমার অসহায়ত্বের কথা ও মানবিক দিক বিবেচনা করে গ্রামের মানুষের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা তুলে সহযোগিতা করা হয়। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতার টাকা এবং ধার দেনা করে পুনরায় পান চাষ শুরু করি। পান পাতায় পরিপূর্ণ বরজ থেকে বুধবার পান কাটার জন্য শ্রমিকও ঠিক করি।আশা ছিল দামের বাজারে পান বিক্রি করে কিছুটা হলেও স্বচ্ছলতা ফিরবে। কিন্তু মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে প্রতিপক্ষের দেয়া আগুনে স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে।
নড়াগাতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রোকসানা খাতুন বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, আগুন দেয়ার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক