৪ এপ্রিল, ২০২০ ১৫:২৮

দিনাজপুরে মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে লিচুর বাগান

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরে মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে লিচুর বাগান

দিনাজপুরে মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে লিচুর বাগান। লিচু বাগানগুলোয় এখন মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। আর এই মৌ গন্ধে মৌমাছিরা সংগ্রহ করছে মধু। সুস্বাদু, মিষ্টি ও লোভনীয় এ মধু মৌমাছির মাধ্যমে আহরন করছেন মৌচাষীরা। এতে বাগানীরা ও মৌচাষী উভয় লাভবান হচ্ছেন।

লিচু বাগানে মৌমাছির বাক্স বসিয়ে দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় মধু আহরন করছেন মৌচাষীরা। এসব ভ্রাম্যমাণ মৌচাষিরা লিচুগাছের তলায় বাক্স বসিয়ে এই মধু সংগ্রহ করছেন। মৌচাষীরা মধু সংগ্রহ করে লাভবান অন্যদিকে মৌমাছির মাধ্যমে মুকুলের পরাগায়ন ঘটায় লিচুর বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগানীরা। এতে বেকারত্ব যেমন দুর হচ্ছে, তেমনি লিচুর ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার এ মধু যেমন খাটি, তেমনি সুস্বাদু। মানের দিক থেকেও উন্নত হওয়ায়, তাই এর চাহিদাও বেশী।

দিনাজপুর সদর উপ‌জেলার চে‌হেলগাজী ইউ‌নিয়‌নের রানীগঞ্জ মোড় এলাকার লিচুবাগানে ২০০ মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করছেন হাফিজুর রহমান হাফিজ। হা‌ফিজুর রহমান ১৯৭৭সাল থেকে মধু উৎপাদন ক‌রে উ‌দ্যোক্তা হি‌সে‌বে প্রতি‌ষ্ঠিত হয়েছেন। বাংলা‌দেশ ক্ষুদ্র ও কু‌ঠির শিল্প ক‌র্পো‌রেশন(‌বি‌সিক)এর মৌমাছি চ‌া‌ষের প্রশিক্ষক হিসেবেও তিনি দীর্ঘদিন কর্মরত আ‌ছেন।

হা‌ফিজুর রহমান হাফিজ জানান, কাঠের বাক্সে তিন ধর‌ে‌ন‌র মৌমা‌ছি থা‌কে মৌচা‌কে। রাণী, পুরুষ আর শ্রমিক মাছি। ২-৩ বছর পর্যন্ত বাঁচ‌তে পা‌রে রাণী। পুরুষ মৌমা‌ছিরা বাঁচে দেড় মাস। শ্রমি‌কেরা বাঁচে এক মাস। পুরুষ মৌমা‌ছির হুল নেই এবং সব‌চে‌য়ে অলস। এরা শুধু প্রজননে অংশ নেয়। মৌচা‌কের সব‌চে‌য়ে কার্যক্ষম হ‌লো শ্রমিক মা‌ছি। চাক তৈ‌রি, মৌচা‌কের পরিস্কার, মৌ শিশুর লালন, রাণী তৈ‌রি, রাণীর জন‌্য বি‌শেষা‌য়িত রয়াল নামক জেলি উৎপাদন, খাবার সংগ্রহ, নিরাপত্তার মত কাজগু‌লো শ্রমিক মৌমা‌ছিরাই ক‌রে থা‌কে। কা‌ঠের ব‌া‌ক্সে ৮ থে‌কে ১০টি মৌচাক থা‌কে। প্রতি চা‌কে রাণীর সংখ‌্যা মাত্র একটি। নতুন রাণীর সৃষ্টি হ‌লে চাক পৃথক হ‌য়ে যায়। ষড়ভূজাকার মৌ ঘরগু‌লো করা হয়। মধু উৎপা‌দিত হয় উপরে, নি‌চের দি‌কে বাচ্চা তৈ‌রির জন‌্য রাণী ডিম পা‌ড়ে। 

তিনি আরও জানান, লিচু বাগানে ২০০টি মৌ বাক্স রয়েছে। এ কাজের জন্যে বেতন দিয়ে ২জন লোক রেখেছি। আবহাওয়া ভাল থাকে তবে একটি মৌ বাক্স থেকে ৫০-৬০ কেজি মধু পাওয়া যায়। প্রতি সপ্তাহে বাক্স থেকে মধু আহরন করি। মওসুমে একটি বাক্সসহ বিভিন্ন খরচ হয় মোট ৩ হাজার টাকা। এরপরেও এটি লাভজনক ব্যবসা। তবে কেউ আন্তরিকতা, ধৈর্য্য নিয়ে পুজি বিনিয়োগ করলে লাভ হবেই। লোকসান হবেনা বলে জানান তিনি। 

 

বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর