বরিশালের আগৈলঝাড়ায় করোনা আক্রান্ত সন্দেহে চাচিকে রাস্তায় ফেলে পালিয়েছে তার ভাতিজা। খবর পেয়ে ৪ ঘণ্টা পর স্থানীয় সাংবাদিকদের সহায়তায় ওই নারীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে থানা পুলিশ। সোমবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ওই বৃদ্ধার জন্য ওষুধ ও খাদ্যসহ আনুষাঙ্গিক সব সুবিধা দেয়ার কথা জানিয়েছেন আগেলঝাড়া থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন।
ওই বৃদ্ধার নাম দীপু বালা (৭০)। তিনি আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর গ্রামের প্রয়াত অশ্বিনী বালার স্ত্রী। ৩ বছর আগে তার স্বামীর মৃত্যু হয়। দাম্পত্য জীবনে তার কোনো সন্তান নেই। মানুষের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি।
সবশেষ তিনি কাজ করতেন বরিশাল নগরীর কাঠপট্টি রোডের ধীরেণ সিকদারের বাসায়। গত ৪/৫দিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন দীপু বালা। গৃহকর্তা ধীরেণ সিকদার স্থানীয়ভাবে ডাক্তার দেখিয়ে তাকে ওষুধ কিনে দেন। একই সাথে তাকে গ্রামে পাঠিয়ে দেয়ার জন্য তার স্বজনদের খবর দেয়া হয়।
আস্কর গ্রাম থেকে দীপু বালার ভাতিজা মিথুন সাহা গত সোমবার বরিশাল নগরীতে এসে তার চাচিকে (পিসি) নিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আগৈলঝাড়া বাইপাস সড়ক স্ট্যান্ডে নামেন তারা। পথিমধ্যে দীপু বালা অসুস্থ বোধ করলে তাকে রাস্তায় ফেলে সটকে পড়েন তার ভাতিজা মিথুন। এ সময় রাস্তায় শুয়ে পড়েন তিনি। বৃস্টি আসন্ন দেখে স্থানীয় সাংবাদিকরা ওই বৃদ্ধাকে সড়কের পাশে একটি রেস্তোরার সামনে বসার ব্যবস্থা করেন এবং বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসিকে জানান।
ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ওসির নির্দেশে পুলিশের একটি দল ওই বৃদ্ধাকে নারীকে উদ্ধার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে থানার ওসি ওই নারীকে প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং খাবার সামগ্রী কিনে দেন। একই সাথে ওই বৃদ্ধার ভাতিজার অবহেলার বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল-মামুন জানান, ওই বৃদ্ধার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে। প্র্রাথমিকভাবে তার করোনা উপসর্গ নেই বলে মনে হলেও প্রয়োজনে তার করোনা পরীক্ষা করানো হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল