বাংলাদেশ প্রতিদিন অনলাইন সংস্করণে নাটোরের ‘গুরুদাসপুরে পুত্রবধূর নিয়মিত অত্যাচারে থানায় হাজির বৃদ্ধ দম্পতি’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি দৃষ্টিগোচর হলে নির্যাতিত বৃদ্ধ দম্পতির বাসায় ছুটে যান গুরুদাসপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তমাল হোসেন।
বৃদ্ধ দম্পতি খোরশেদ আলী (৮০) ও তার স্ত্রী আয়শা খাতুন (৭৫) একটি ছাপড়া ঘরে বসবাস করেন। সংসারে রয়েছে তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। তাদের বাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের দুর্গাপুর মধ্যমপাড়া গ্রামে। সন্তানরা যে যার যার মত আলাদা থাকেন। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে এবং দুই ছেলে অন্য জেলায় বসবাস করেন। ছোট ছেলে বাহারের সাথেই থাকেন তারা। শ্বশুর-শাশুড়ি দু’জনই বৃদ্ধ হওয়ায় মাঝে মাঝেই নির্যাতন করে ছোট ছেলে বাহারের স্ত্রী। বাড়ির জায়গা টুকু ছাড়া তাদের আর কোনো জায়গা জমি নেই। খেয়ে না খেয়ে দুঃখ কষ্টে চলে তাদের সংসার।
গত সোমবার বাংলাদেশ প্রতিদিন অনলাইন সংস্করণে নাটোরের পুত্রবধূর হাতে বৃদ্ধ দম্পতির নির্যাতনের সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে ইউএনও মো. তমাল হোসেন তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে গিয়ে তাদের সার্বিক সমস্যার কথা শোনেন। তারা দুই জনই একটি ভাঙা ছাপরা ঘরে থাকেন। বৃষ্টি আসলে পানি পড়ে। খুব কষ্টে জীবন যাপন করতে হয় তাদের। বৃদ্ধ দম্পতির কষ্ট কিছুটা লাঘবের জন্য আর্থিক অনুদান তাদের হাতে তুলে দেন ইউএনও এবং তাদের ঘরটি মেরামত করে দিবেন বলেও তাদের তিনি জানান। আর্থিক অনুদান ও ঘর মেরামতের কথা শুনে খুশিতে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধ দম্পতি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তমাল হোসেন জানান, বিকেলে বৃদ্ধ দম্পতির পুত্রবধূর হাতে নির্যাতনের ঘটনা শোনার পর তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যাই। ওই দম্পতির বাড়িতে গিয়ে তাদের ছেলের স্ত্রীর সাথে কথা বলি এবং তাদের সার্বিক সমস্যার কথা শুনি। পুত্রবধূকে প্রাথমিক পর্যায়ে নিষেধ করা হয়েছে। শ্বশুর-শাশুড়িকে যেন নির্যাতন না করে এবং ঠিক মত যত্ন নেয়। তা না হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও ওই দম্পতির পুত্রবধূকে জানানো হয়েছে। তাদের ঘরটি বসবাসের উপযুক্ত না। এ জন্য নগদ কিছু অর্থ তাদের দু’জনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এবং ঘরটি মেরামত করে দেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন