২১ আগস্ট, ২০২০ ১৬:০৭
নেত্রকোনায় ট্রলার ডুবি

যাত্রী বোঝাইয়ের অভিযোগ পায়নি তদন্ত কমিটি, প্রতিবেদন প্রকাশে টালবাহানা

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

যাত্রী বোঝাইয়ের অভিযোগ পায়নি তদন্ত কমিটি, প্রতিবেদন প্রকাশে টালবাহানা

গত ৫ আগস্ট নেত্রকোনার মদনে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ট্রলার ডুবিতে মারা যান ১৮ জন

নেত্রকোনার মদনে ট্রলার ডুবিতে ১৮ জন নিহতের ঘটনায় গঠিত কমিটি তাদের তদন্ত সম্পন্ন করেছে। তদন্তে ট্রলারে  বেশি যাত্রী তোলার কোনো অভিযোগ পায়নি কমিটি। এই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ নিয়ে চলছে টালবাহানা। চার সদস্যের গঠিত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার অতিরিক্ত সময় পার করে অবশেষে জমা দিলেও তাতে কী রয়েছে, তা এখনও প্রকাশ করেননি জেলা প্রশাসক।

কমিটি গঠনের সাত কার্যদিবস অনুযায়ী গত ১৭ আগস্ট জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা জমা দেয়া হয় ১৯ আগস্ট রাতে। এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রতিবেদন জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও তা খুলে দেখা হয়নি বলে জানান জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান। 

তবে একটি সূত্র জানায় গেছে, জেলা প্রশাসক দুর্গাপুরে সফরে থাকায় পরবর্তী কার্যদিবসে অর্থাৎ রবিবারে জানা যেতে পারে তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয় এবং করণীয়। তবে রবিবারেই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে কি না, তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেননি।
 
এদিকে কার্যালয়ে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, প্রতিবেদনটি একদম সিলগালা করে দেয়া আছে, যা আমরা খুলে দেখতে পারি না। জেলা প্রশাসক এ বিষয় কথা বলবেন।
 
পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসীও জানান, হাতে এসে পৌঁছলে বলা যাবে, কী তদন্ত হয়েছে অথবা কী বিষয় বাকি রয়েছে। না দেখে বলা যাচ্ছে না কিছু।

অন্যদিকে তদন্ত কমিটির প্রধান মদন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মামলা হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা তদন্ত করেছি। এই দ্বায়িত্বই আমাদের। মামলা করার মতো বা ট্রলার চালক বেশি যাত্রী নিয়েছে আমরা এমন কোনো অভিযোগ পাইনি।

গত ৫ আগস্ট ময়মনসিংহ থেকে ঘুরতে আসা ৪৮ জন পর্যটক নিয়ে মদনের উচিতপুর ট্রলার ঘাট থেকে লাহুত মিয়ার নৌকা হাওরের মাঝখানে যায়।
রাজালিকান্দা নামক স্থানে পৌঁছলেই ট্রলারটি ডুবে যায়। তখন নৌকার ৩০ জন যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ১৮ জন ডুবে যান। পরে স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে একসঙ্গে ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরের দিন সকালে আরেকজনের মরদেহ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে, মদন থানায় খবর দেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়, অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই ছিল ট্রলারটি। এতে সুরক্ষাসামগ্রী ছিল না। নিরাপত্তাজনিত কিছুই না মেনে বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করেই যাত্রী নিয়ে যান চালক। 

ট্রলার ডুবির পরের দিন ৬ আগস্ট চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেয়া ছিল।

এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, অঘোষিত পর্যটন স্পট হিসেবে সাধারণ মানুষদের পদচারণার পর থেকেই ঘাটটি মাত্র দুই লাখ টাকায় ইজারা থেকে তিন বছরে ২১ লাখা ৫৬ হাজার টাকায় ইজারা দেয়া হয়। সরকার রাজস্ব বাড়িয়ে দিলেও দেখভাল করেনি।  

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর