বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের ধাপ-সুখানগাড়ী এলাকার নাগর নদের উপর একটি সেতুর অভাবে দুই উপজেলার ৫টি গ্রামের প্রায় ৩ লাখ মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেতু না পেয়ে নিজেদের অর্থ দিয়ে প্রায় ১০ বছর ধরে এলাকাবাসী বাঁশের সেতু তৈরি করে। এখনো ঝুঁকি নিয়ে ওই সেতু দিয়েই চলাচল করছে তারা। চলাচল করতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই সেতুর বিভিন্ন অংশ খুলে যায়। যে কারণে প্রচণ্ড ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের।
জানা যায়, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের পৌরসভার ধাপ-সুখানগাড়ী এলাকায় নাগর নদের সীমান্তবর্তী এলাকা কাহালু উপজেলার বীরকেদার ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের সাধারণ মানুষ বাঁশের সেতুটি দিয়ে দীর্ঘ দিন যাবত চলাচল করছে। ধাপ-সুখানগাড়ী ও গোসারবাগ পাড়া এলাকায় এই বাঁশের সেতুটি অবস্থিত। কাহালু উপজেলার বীরকেদারের জিন্নাহ পাড়া, আটালিয়া, জাঙ্গালপাড়া ও গোসারবাগ পাড়ার সাধারণ মানুষরা তাদের এই সেতুটি ব্যবহার করে থাকে। এই সেতুটি এলাকাবাসীর চলাচলের একমাত্র পথ।
বিভিন্ন দপ্তরে দাবি জানানোর পরেও পাকা সেতু না হওয়ায় নিজেদের দুর্ভোগ কমাতে গ্রামের লোকজনের নিজেদের অর্থায়নে ১০ বছর আগে নাগর নদের উপর এই বাঁশের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের একবছর পর থেকে সেতুটির মাঝে মাঝেই কিছু অংশ খুলে যায়। আবার সেটি মেরামত করে স্থানীয়রা। এই সেতুর পার্শ্বেই বগুড়া জেলার বৃহৎ হাটগুলোর মধ্যে ঐতিহ্যবাহী ধাপ-সুলতানগঞ্জ হাট অবস্থিত। ফলে হাটবারে ওই গ্রামের লোকজন ছাড়াও কাহালু, শিবগঞ্জ, কালাই উপজেলার বিভিন্ন হাটুরিয়া তাদের পণ্য কেনা-বেচার জন্য এই বাঁশের সেতুটি ব্যবহার করে থাকে। প্রতি হাটবারে দিনে ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষের সমাগম হয়ে থাকে। এতে হাটবারে ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন পণ্য কৃষকরা সেতুর উপর দিয়েই বহন করে থাকে। বাঁশের সেতুটি দুপচাঁচিয়া ও কাহালু দুই উপজেলার ৫ এলাকার মানুষের জন্য দুর্ভোগ। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই এই সেতু দিয়ে সাধারণ মানুষ চলাচল করছে। এতে কৃষকের পণ্য বহনে সমস্যাসহ অসুস্থ রোগী ও স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়ছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এই স্থানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের।
বগুড়ার কাহালু উপজেলার বীরকেদার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সেলিম উদ্দিন জানান, বীরকেদার ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের লোকজন এই বাঁশের সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে থাকে। এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টিও কামনা করেছেন। তিনি জানান, সেতুটি নির্মাণ হলে দুই উপজেলার ওই ৫ গ্রামের কমপক্ষে ৩ লাখ মানুষের দুর্ভোগ কমে যাবে।
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল আলম জানান, নাগর নদের উপর পৃথক জনগুরুত্বপূর্ণ দু’টি স্থানে দু’টি সেতু নির্মাণের অনুমোদন ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা