২৭ অক্টোবর, ২০২০ ২০:৫৫

পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে মারধর, ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে মারধর, ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

প্রতীকী ছবি

২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে না পাওয়ায় স্ত্রীকে নির্যাতন ও পরকীয়ায় লিপ্ত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এক ব্যাংক কর্মকর্তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বিকেলে রংপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শওকত আলী এ আদেশ দেন।

কারাগারে যাওয়া ব্যাংক কর্মকর্তার নাম মামুনুর রহমান মামুন। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুর কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা ও রংপুর নগরীর ধাপ কাকলী লেনের মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে। 

মামলার অভিযোগে জানা যায়, মামুনের সাথে ১১ বছর আগে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পান্থপাড়া গ্রামের মনসুর আলী মণ্ডলের মেয়ে রুপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মাফরুহা আখতারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর বাবার বাড়ি রংপুর নগরীর ধাপ কাকলী লেনের বাসায় বসবাস করে আসছিলেন তারা।

মামলার বাদী অভিযোগ করেন, তার স্বামী বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুর কার্যালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার স্ত্রীর সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিসহ ভাইরাল হলে ব্যাংকে তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে প্রায়ই তাকে মারধর করতো স্বামী মামুন।

অবশেষে পরকীয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যাংকের তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে মামুন ওয়াদা করে সে আর পরকীয়ায় লিপ্ত হবে না এবং স্ত্রীকে নির্যাতন করবে না। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই আবারো ওই নারীর সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয় এবং স্ত্রী মাফরুহাকে অমানুষিক নির্যাতন করে। সেই সাথে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে।

টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় চলতি বছরের ২১ মে বেদম মারধর করে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করা হয় তাকে। এছাড়া গভীর রাতে ৪ বছরের কন্যা সন্তানসহ বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়।

গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় গোবিন্দগঞ্জের বাসায় এসে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন তিনি। এরপর চলতি বছরের ১ জুলাই রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী থানায় মাফরুহা আখতার নিজেই বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়ের করার পর বাদীকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে আসামি মামুন। ফলে জীবনের নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় রুপালী ব্যাংক রংপুর সেন্ট্রাল রোড শাখা থেকে বগুড়া শাখায় বদলি নিয়ে সেখানে চাকরি করছেন মাফরুহা।

এদিকে, এ ঘটনার দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার দুপুরে রংপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আসামি মামুনুর রহমান হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী পিপি আব্দুল মালেক জানান, আসামি তার স্ত্রীর প্রতি যে অমানুষিক নির্যাতন করেছে, তার ভিডিও চিত্র সে নিজেই ধারণ করে রেখেছে তার পরকীয়ায় লিপ্ত হওয়া প্রেমিকাকে দেখানোর জন্য। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল ছবি প্রেমিকার কাছে দেওয়া শত শত ম্যাসেজ ও অন্যান্য কাগজপত্র প্রমাণ করে আসামি একজন নারী নির্যাতনকারী।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর