ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠাণ্ডায় কুড়িগ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন রাতভর কুয়াশা ও অতিরিক্ত ঠান্ডায় জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। সোমবার সকালে রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস আরো জানায়, শীতের কুয়াশা ও ঠান্ডায় তাপমাত্রার আরো দ্রুত অবনতির দিকেই যাবে।
এদিকে, অব্যাহত কুয়াশা ও ঠান্ডায় কাতর হয়ে পড়েছে জনজীবন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশায় ঢেকে থাকে গোটা জনপদ।শীতের প্রচন্ড ঠান্ডার কারনে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষগুলোর কষ্ট বেড়েই চলেছে। সদ্য বেড়ে ওঠা বোরো বীজতলাসহ কেবলই গজিয়ে ওঠা আলু খেতগুলোতে অতিরিক্ত কুয়াশার কারনে ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা।
সদর উপজেলার পাঁচগাছী কদমতলা এলাকার কৃষক বদরুল ইসলাম বলেন, একেতো এবার কয়েক দফা বন্যায় আমাদের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। তার ধকল কাটতে না কাটতেই আবার শীতের ধকল কৃষিতে পড়েছে। বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আগাম কৃষি শুরু করেছি। কয়েক সের জমিতে বোরো বীজ লাগিয়েছি। কুয়াশার কারনে কিছু বীজতলা ঠান্ডায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম।
কৃষি বিভাগের মতে, এখনও শীতের কুয়াশায় সেরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি বলে জানা গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: মঞ্জুরুল হক জানান, এখন পর্যন্ত ঘন কুয়াশা ও শীতের কারনে কোন আবাদ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।বরং গজিয়ে ওঠা আলুর গাছগুলো ভালভাবে বেড়ে উঠবে।
অন্যদিকে, অতিরিক্ত ঠান্ডায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার ছোট বড় ১৬টি নদনদী তীরের সাড়ে ৪শতাধিক চরের হতদরিদ্র মানুষ।এসব মানুষ সকাল হলেই কাজে বেরিয়ে পড়েন।কিন্তু এ ঠান্ডায় দুপুর পেরিয়ে গেলেও কাজে যেতে পারছেন না। ফলে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছে। এছাড়াও গত দুই সপ্তাহে শীতজনিত ডায়রিয়া,আমাশয়,নিউমোনিয়াসহ নানা রোগ ব্যাধি বাড়ছে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালসহ ৯ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসছেন আক্রান্ত মানুষজন।এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ।
শুলকাুর বাজার এলাকার করিমুন্নেসা বেওয়া জানান, তার নাতি বয়স মাত্র ১মাস। তাকে ডায়রিয়া ও সর্দিকাশিতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও শীতে গরম কাপড় কিনতে মানুষজন ছুটছেন কাপড়ের দোকানে।
শহরের জজকোর্ট মোড়, পৌরবাজার,ফায়ার সার্ভিস মোড়সহ বিভিন্ন ফুটপাত এলাকায় কম দামের শীতের কাপড় কিনতে যথেষ্ঠ ভীড় করতে দেখা গেছে শীতার্ত মানুষগুলোকে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার