কুমিল্লায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া কিশোর মো. আরাফাত হোসেনের (১৪) পরিবারের দাবি নির্যাতনের পর তাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় বুধবার রাতে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
ওই কিশোরের বাবার অভিযোগ, তিনি থানায় গিয়েছিলেন হত্যা মামলা করতে। তবে পুলিশ তাকে ভুল বুঝিয়ে হত্যা মামলা না নিয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে। এজন্য আদালতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তবে এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
গত মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লা শহরতলীর ডুমুরিয়া চাঁনপুর গয়ামবাগিচা (বউবাজার) এলাকায় আগুনে পুড়ে মারা যায় কিশোর আরাফাত। সে চাঁনপুর ফকির বাড়ির আবদুল বারেকের ছেলে। আরাফাত থাই গ্লাসের মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতো। ঘটনার শুরু থেকেই ওই কিশোরের পরিবারের দাবি, মাদক সেবনে বাধা দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে আরাফাতকে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই কিশোরের পিতা আবদুল বারেক বলেন, আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমি থানায় গিয়েছি হত্যা মামলা করতে। কিন্তু পুলিশের লোকেরা আমাকে বলে হত্যা মামলা করলে আমি সাক্ষী পাবো কোথায়। তারা আগে তদন্ত করবে, এরপর নাকি হত্যা মামলা রেকর্ড করবে। এক পর্যায়ে তাদের লোকজন একটি অপমৃত্যুর মামলা লিখে। এরপর আমার কাছ থেকে সেই মামলায় স্বাক্ষর নেওয়া হয়। আমি সকল তথ্য সংগ্রহ করছি। শিগগিরই কোর্টে ছেলে হত্যার বিচারের জন্য হত্যা মামলা করব।
নিহতের চাচাতো ভাই রিয়াদ হাসান হৃদয় বলেন, আরাফাতকে তারা প্রথমে নির্যাতন করেছে, এরপর ওই লেপ-তোশকের দোকানে আগুন লাগিয়ে তাকে পুড়িয়ে হত্যা করছে। এটা কোনোভাবেই অপমৃত্যু হতে পারে না। আর আরাফাতের পুড়ে যাওয়া লাশ যেভাবে পাওয়া গেছে তাতে মনে হচ্ছে খুনিরা তার হাত-পা বেঁধে রেখেছিল। যেই লেপ-তোশকের গোডাউনে তার লাশ পাওয়া গেছে সেটি একটি টিনের ঘর। ওই ঘরে সে আগুন নেভাতে গিয়ে পুড়ে মরবে এটা অবাস্তব ও অসম্ভব।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল হক বলেন, আমরা নিজেরা কেন অপমৃত্যুর মামলা নিতে যাব? তারা দু’দিন অপেক্ষা করে এবং চিন্তা-ভাবনা করেই অপমৃত্যুর মামলা করেছে। অপমৃত্যুর মামলার বাদী হয়েছে ওই কিশোরের পিতা আবদুল বারেক নিজেই।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুরে বউবাজারের হাজী সুলতান আহমেদ সুপার মার্কেটের পেছনে থাকা একটি লেপ-তোশকের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে মার্কেটের ৯টি দোকান পুড়ে যায়। পরে সেখান থেকে আরাফাতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন