ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লাহিড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের জনবল নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
বুধবার বিজ্ঞ বালিয়াডাঙ্গী সহকারী জজ আদালত, ঠাকুরগাঁওয়ে এ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোশারফ হোসেনের পক্ষে এ মামলা দায়ের করেন।
তবে মামলা দায়েরের ঘটনার পরেও আগামী ১১ জানুয়ারি ওই বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করে প্রার্থীদের পুনরায় পরীক্ষার প্রবেশপত্র প্রদান করা হয়েছে। যদিও এর আগে ০৬ জানুয়ারি তারিখে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বিকাল সাড়ে ৩টায় প্রার্থীদের পরীক্ষার আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। মাত্র ২ জন প্রার্থী উপস্থিত থাকার কারণে পরীক্ষা স্থগিত করে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি একটি জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে সরকারি বিধি মোতাবেক লাহিড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন কম্পিউটার ল্যাব অপাটের পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। সভাপতির নিকটতম এক আত্মীয়কে গোপনে নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে মাত্র ০৮ জন প্রার্থীকে পরীক্ষার প্রবেশপত্র সরবরাহ করেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান।
অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের সভাপতি আলাল আকতারের নিকটকতম আত্মীয় মিসেস তানভিন আক্তার নামে এক চাকরি প্রার্থীকে বিধিভঙ্গ করে নিয়োগ প্রদানের পায়তারা করছে। বিধি মোতাবেক ওই পদে চাকরির জন্য ৩ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা পাশের যোগ্যতা লাগবে মর্মে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ থাকলেও মিসেস তানভিন আক্তারের কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে ২ বছরের মেয়াদী ডিপ্লোমা পাশের সনদধারী প্রার্থী। এছাড়াও নিয়োগ কমিটি ম্যানেজিং কমিটির অনেক সদস্যের মতামত না নিয়েই গঠন করা হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ তোলা হয়েছে।
মামলার বাদী মোশারফ হোসেন খোদ লাহিড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এবং ওই পদে একজন চাকরির প্রার্থী আরিফুজ্জামানের পিতা। তিনি বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ আগামী ১২ জানুয়ারি শেষ হবে। তাই সভাপতি শেষ সময়ে গোপনে নিজের আত্মীয়কে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য অবৈধ ভাবে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। বিধি মোতাবেক নিয়োগের দাবিতে আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আশা করছি আদালত সুষ্ঠু সমাধান দিবে।
মামলার আইনজীবি বলেন, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য আদালত নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি কথা বলতে রাজী হননি।
তবে বিদ্যালয়ের সভাপতি আলাল আক্তার বলেন, মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে এখন কোন মন্তব্য করতে চাই না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান বলেন, গত ৬ জানুয়ারি পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। বিধি মোতাবেক নিয়োগ হবে। কোন অনিয়ম হলে ছাড় দেওয়া হবে না।
ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মোঃ আলাউদ্দীন আল আজাদ জানান, মামলার বিয়ষটি আমি জানিনা।
নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্র ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহানা খান বলেন, গত ৬ জানুয়ারি প্রার্থী না থাকার কারণে ওই স্কুলের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন