নেত্রকোনার মদন উপজেলায় বড় বোনকে বিয়ে করতে না পারায় চাচাতো ছোট বোনকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ২২ বছর বয়সী জাকিম মিয়া (২২) নামের যুবকের বিরুদ্ধে।
ধর্ষণের শিকার শিশুটি একটি কওমী মাদ্রাসার ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের রুদ্রশ্রী গ্রামে। গত বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) ধর্ষণের ঘটনার এক সপ্তাহ পর মামলা করে ভুক্তভোগীর পরিবার। মামলার পরপরই বৃহস্পতিবার পরীক্ষার জন্য ধর্ষণের শিকার শিশুকে মেডিকেলে পরীক্ষার জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
অভিযোগকারীদের ভাষ্য অনুযায়ী হুমকীর জন্যই তারা ভয়ে চুপ করে ছিলেন বলেও জানা গেছে।
ধর্ষণের শিকার ঐ শিশুর পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, জাকিম মিয়া আগে থেকেই তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। এই সুবাধে ঐ বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এই প্রস্তাবে অসম্মতি জানায় মেয়ের চাচা। পরে গত প্রায় একমাস আগে ওই মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার পর থেকেই জাকিম ওই মেয়ের চাচাসহ পরিবারেকে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে আসে।
এরই জের ধরে গত বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) বিয়ে হয়ে যাওয়া মেয়েটির চাচাতো ছোট বোনকে রাতে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায়। সবাই খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে গেলে ঘরের ছিটিকিরির ফাঁক দিয়ে দরজা খুলে যুবকটি কয়েকজনকে নিয়ে মুখে কাপড় চাপা দিয়ে শিশুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক বাড়ির সামনে পতিত জমিতে নিয়ে ধর্ষণ করলে মেয়েটি অচেতন হয়ে পড়ে।
এদিকে, মেয়েটির বাবা রাতেই জমিতে সেচ দিয়ে বাড়ি আসার সময় তার মেয়েকে বাড়ির সামনে অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। পরিবারের লোকজন তাকে বাড়ি নিয়ে আসলে মেয়েটি সব ঘটনা পরিবারের লোকজনের কাছে খুলে বলে।
ধর্ষণের স্বীকার মেয়েটির বাবা বলেন, প্রতিবেশী সমুর আলীর ছেলে জাকিম আমার বড় ভাইয়ের মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে আমি এতে অসম্মতি প্রকাশ করি। এক মাস আগে আমার ভাতিজীকে অন্যত্র বিয়ে দিয়েছি। এর পর থেকেই জাকিম আমাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসে।
গত বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) রাতে আমি জমিতে সেচ দিয়ে হাওর থেকে আসার সময় দেখতে পাই বাড়ির সামনের জমিতে অচেতন অবস্থায় আমার মেয়ে পড়ে রয়েছে। বাড়িতে আনার পর জ্ঞান ফিরলে ওখানে কিভাবে গেলে জানতে চাইলে ধর্ষণের ঘটনা বলে। এই ঘটনার পর থেকে কাউকে কিছু না বলতে তার পরিবারের লোকজন আমাকে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে অভিযুক্ত যুবকের মা তাজমহল বেগমের দাবি, পাশের বাড়ির মেয়ের সাথে তার ছেলের প্রেমের সর্ম্পক ছিলো। বিয়ের প্রস্তাবও দেন। কিন্তু তারা আমাদের সাথে দিয়ে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়েছেন। এখন ছেলেকে ফাঁসাতে ঐ মেয়ের বোনকে ধর্ষণের অভিযোগ করছে।
এ ব্যাপারে মদন থানার ওসি মাসুদুজ্জামান জানান, আমরা অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তাকে পরীক্ষার জন্য নেত্রকোনায় পাঠিয়েছি। আসামি ধরার চেষ্টা চলছে।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ