শ্রবণ প্রতিবন্ধী শাহিন মিয়ার কথা মানুষ ঠিকমত বুঝতে না পারলেও তাতে কি! প্রিয় ঘোড়াটি ঠিকই বুঝে তার ইশারা ইঙ্গিত! ঘোড়া ঠিকই গাড়ি টেনে নিয়ে চলে দিগ দিগন্তে। জোগায় পরিবারের আহার। গাড়ি চালাতে শাহিন মিয়ারও কোন সমস্যা হয় না।
এই শাহিন মিয়ার বাড়ি নেত্রকোনার জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের গোগ গ্রামে। তার সংসারের আয়ের উৎস একটি মাত্র ঘোড়ার গাড়ি। সারাদিন গাড়ি চালিয়ে যা পান তা দিয়েই তার সংসার চলে। তবে প্রতিদিন কাজ পাওয়া যায় না। কখনো কখনো বসে থাকতে হয় সাথী ঘোড়াকে নিয়ে।
স্থানীয়রা জানান, আধুনিকতার ছোঁয়ায় বদলে গেছে বর্তমানে সবকিছু। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও দ্রুত গতির যানবাহন পাওয়া যায় আজকাল। তাই মানুষ এখন ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে আর মালামাল পরিবহন করে না। যে কারণে এই ব্যবসা এখন চোখেই পড়ে না তেমন। কিন্তু কিছু কিছু গ্রামে এখনো এমন সড়ক রয়েছে যে পায়ে হাঁটা অথবা গরুর গাড়ি ঘোড়ার গাড়ি এগুলোই একমাত্র ভরসা। তেমন সড়ক এখনো আমাদের অনেক গ্রামেই রয়েছে। যেগুলো দিয়ে বর্তমান যুগের আধুনিক বাহন এখনো চলে না। ভবিষ্যতে চলতেও আরো সময় নিবে। আধুনিকতার ছোঁয়া এখনো অনেক গ্রামাঞ্চলে না লাগায় সেগুলোতে পুরনো বাহনগুলো ব্যবহার হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়েই অনেকে এখনো পুরনো এসকল বাহন ব্যবহার করে।
তারা আরো জানান, যে সব গ্রামের রাস্তায় গাড়ি ঢুকতে পারে না সেই সব গ্রাম থেকে ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে অনেকেই বেশিরভাগ কৃষি পণ্য পরিবহন করে থাকেন। তার মধ্যে কেন্দুয়া উপজেলার হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার তারা এখনো ঘোড়ার গাড়ির আয় দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এদের মধ্যে শ্রবন প্রতিবন্ধী শাহিন মিয়াও একজন। তিনি ইশারায় কথা বলে। এমনকি তার ইশারা ঘোড়াটিও বুঝে।
ঘোড়ার গাড়ি চালক শ্রবন প্রতিবন্ধী শাহিন মিয়ার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি তার ভাষায় (ইশারা সংকেতে) বুঝিয়েছেন অনেক কিছু। তিনি বলেন, তার কথা মানুষ বুঝতে না পারলেও ঘোড়া ঠিকই বুঝে। যে কারণে তার কোন সমস্যা হয় না।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল