সিরাজগঞ্জে স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দন বণিককে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার বিকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-২ (জেলা ও দায়রা জজ) এর বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন তাকে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন।
চিকিৎসক চন্দন বণিক টাঙ্গাইল পৌর শহরের প্যারাডাইস পাড়া মহল্লার ব্রজ গোপাল বণিকের ছেলে।
মামলা সুত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বর তাড়াশ পৌর শহরের ঘোষ পাড়া মহল্লার বাসিন্দা বব্রু বাহন রায়ের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে তনুশ্রী রায়ের সঙ্গে টাঙ্গাইল পৌর শহরের প্যারাডাইস পাড়া মহল্লার ব্রজ গোপাল বণিকের ছেলে চিকিৎসক চন্দন বণিকের সাথে নগদ দুইলাখ টাকা ও সাত ভরি স্বার্ণালংকার দেয়ার মাধ্যমে ঘটা করে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু দির পর থেকেই স্বামী চন্দন বণিক আরো তিন লাখ টাকার জন্য স্ত্রী তনুশ্রীকে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু এতে তনুশ্রীর বাড়ি থেকে টাকা দিতে না পারায় প্রতি নিয়তই তার ওপর চলতে থাকে অমানুষিক অত্যাচার। এক পর্যায়ে স্বামী, শাশুড়ি ও শ্বশুর মিলে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। এ অবস্থায় তনুশ্রী যখন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তখন টাঙ্গাইলের নীলাচল ১২৮নং বাসায় (২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর) স্বামী, শাশুড়ি ও শ্বশুর মিলে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা আনতে চাপ দেন। কিন্তু তনুশ্রী টাকা আনতে না চাইলে তার পেটের সন্তানকে হত্যার উদ্দেশ্যে চন্দন স্ত্রীর পেটে সজোরে লাথি মারে। এতে তনশ্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরবর্তীতে তাকে টাঙ্গাইলের একটি ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে গর্ভপাত ঘটিয়ে অনাগত সন্তানকে হত্যা করে। এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-২ এ ২৬ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে ১১৩/২০ নম্বরে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আব্দুলাহ আল মামুন মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তাড়াশ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আলাউদ্দিনকে দায়িত্ব দেন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সে সময় তাড়াশ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আলাউদ্দিন মামলাটি তদন্ত করে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ দিন মামলাটি চলমান অবস্থায় স্বামী চন্দন বণিক বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জ আদালতে গিয়ে আগাম জামিনের জন্য হাজির হলে বিচারক তাকে আটকের নির্দেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন
এবিষয়ে তনুশ্রীর ভাই বিদ্যুৎ রায় জানান, আমার বোনের স্বামী ডা. চন্দন বণিক একজন অমানুষ। সে আমার অনাগত ভাগ্নেকে হত্যা করেছে। শুধু তাই নয় ওই পরিবার আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে। কারণ হিসেবে তিনি জানান, তার বোনের বিয়ের আগে ওই ডা. চন্দন বণিক আগেও একটা বিয়ে করেছিলেন যা কাউকে বলেনি এমকি বুঝতেও দেয়নি। তিনি এজন্য অপরাধীর শাস্তি চান।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন