মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের লক্ষীনারায়নপুর ধলা গ্রামে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই মেম্বার প্রার্থীর সংঘর্ষে আপন ২ সহোদরসহ ৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে টুটুল মেম্বারসহ আরও ৫০ জন।
নিহতরা হলেন লক্ষীনারায়নপুর গ্রামের জাহারুল ইসলাম (৫০), তার ভাই সাহাদুল ইসলাম (৪৮) ও জাহুরুলের স্ত্রী শেফালী খাতুন। এদিকে, আহতদের মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল ও গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশংকাজনক।
আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে লক্ষীনারায়নপুর ধলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এলাকায় পুলিশ, র্যাব ও ডিবি পুলিশের একাধিক দল টহল জোরদার করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে টেংগু চৈকিদারসহ ১২ জনকে আটক করেছে। মেহেরপুর পুলিশ সুপার রাফিউল আলম সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, কাথুলী ইউপি নির্বাচনে ৭নং ওয়ার্ডের আজমাইন হোসেন টুটুলের লোকজন সকালে ভোট চাইতে গেলে আতিয়ারের কর্মীরা বাধা দেয়। এসময় দু’পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে আজমাইন হোসেন টুটুলের ২ মামাতো ভাই জাহারুল ইসলাম, সাহাদুল ইসলাম ও ভাবী শেফালী খাতুন নিহত হয়। এছাড়া অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়।
এ ঘটনায় ধলা গ্রামে চলছে নারীদের শোকের মাতাম। গ্রামটি প্রায় পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নারী দাবি করেছেন, এলাকা এখন পুরুষ শূন্য। ঘরে ঘরে চলছে লুটপাট। সুযোগ বুঝে কেউ কেউ গরু, ছাগল ও ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে।
টুটুল মেম্বারের মেয়ে সুম্মা খাতুন বলেন, আতিয়ার রহমান আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রায় ২৫ বছর যাবৎ আমাদের পরিবারের উপর হামলা চালাচ্ছে। ১৫ বছর আগে আতিয়ার গ্রুপের লোকজন আমার আপন চাচা (টুটুল মেম্বারের ভাই) সেন্টুকে হত্যা করে। ওই ঘটনার ৩/৪ বছর পরে আবারো আমার আরেক আপন চাচা (টুটুল মেম্বারের ভাই) এনামুল হক নইলুকে হত্যা করে। এ হত্যা মামলা এখনও বিচারাধীন। আবারও আজ আমার দুই মামাতো চাচা ও চাচীকে তারা হত্যা করলো। আমরা প্রশাসনের কাছে এর সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করছি।
তবে মেম্বার প্রার্থী টুটুল আহত থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে আতিয়ার রহমান জানান, আজ সোমবার সকালে আমার কর্মীরা ধলা গ্রামের বড় পুকুর এলাকায় ভোট চাইতে গেলে টুটুল গ্রুপের লোকজন আমার এক কর্মীকে পিটিয়ে আহত করে। আমি সংবাদ পেয়ে সেখানে গিয়ে পরিবেশ শান্ত করতে চাইলে তারা আমাকেও মারধর করে। এসময় টুটুল গ্রুপের লোকজনের সাথে আমার কর্মীদের সংঘর্ষ লেগে যায়।
তিনি আরো জানান, ১৯৯৭ সালে টুটুল গ্রুপ আমার ভাই মাছেদ আলীকে হত্যা করে।’ গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে। বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে তবে তদন্তের স্বার্থে এখন তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা যাবে না।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক