মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের জেটিতে নাব্যতা সংকটের কারণে ভিড়তে পারছে না বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি এসটিএল হারভেস্ট। এতে করে বাগেরহাটের রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আমদানিকৃত মালামাল নিয়ে গত তিনদিন ধরে বঙ্গোপসাগরে বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় অবস্থান করছে জাহাজটি। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ থেকেও বন্দর জেটিতে নাব্যতা সংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এমভি এসটিএল হারভেস্ট’র স্থানীয় শিপিং এজেন্ট কিউএনএস’র ম্যানেজার মো. নাজমুল জানান, পানামা পতাকাবাহী জাহাজটি ভারত থেকে রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩৯০০ মেট্রিকটন মালামাল নিয়ে গত সোমবার সকাল ৯টার দিকে মোংলা বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়াতে আসে। ফেয়ারওয়েতে আসার আগের দিন রবিবার জাহাজটি বন্দর জেটিতে আনার জন্য পাইলট বুকিং দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বন্দর জেটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ গভীরতা না থাকায় কর্তৃপক্ষ জাহাজটি আনতে পারছে না। বন্দরের শুধুমাত্র ৯ নম্বর জেটিতে নাব্যতা রয়েছে। সেখানে বর্তমানে আরও একটি জাহাজ রয়েছে।
এছাড়া ৭ ও ৮ নম্বর জেটিতেও নাব্যতা সংকট রয়েছে। ফলে সময় মতো জাহাজটি জেটিতে আনতে পারছে না বন্দর কর্তৃপক্ষ। রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ মালামাল নিয়ে আসা জাহাজটি জেটিতে আনতে না পারায় ও দ্রুত খালাস করতে না পারলে নির্মাণাধীন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চলমান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। চলতি মাসের ১৫ তারিখেও রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নিয়ে আরও একটি বিদেশি জাহাজ মোংলা বন্দরে আসার কথা রয়েছে। এই অবস্থায় মোংলা বন্দর জেটিতে যে নাব্যতা সংকট রয়েছে তাতে জাহাজ আনা ও পণ্য খালাসে কি অবস্থা হবে, তা নিয়ে শঙ্কিত শিপিং এজেন্ট ও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দীন মোংলা বন্দর জেটিতে নাব্যতা সংকটের বিষয়ে বলেন, জেটিতে প্রতি বছরই ড্রেজিং করে নাব্যতা সংরক্ষণ করতে হয়। এবারও তা করতে গিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওযায় ড্রেজিং করতে বিলম্ব হচ্ছে। বন্দরের ৯ নম্বর জেটিতে নাব্যতা রয়েছে, সেখানে ৭ মিটারের জাহাজ ভিড়তে পারছে। বর্তমানে ৯ নম্বর জেটিতে একটি জাহাজও রয়েছে। ওই জাহাজটি ছেড়ে যাওয়ার পর ফেযারওয়ে বয়া থেকে রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আমদানিকৃত মালামাল নিয়ে আসা জাহাজটিকে এনে পণ্য খালাস করা হবে। বন্দরের ৭ ও ৮ নম্বর জেটিতে ড্রেজিংয়ের জন্য ডাইক (বালু ফেলার স্থান) নির্মাণে বন্দরের নির্ধারিত জায়গা প্রস্তুত করতে গেলে সেখানে অবৈধ ধান ক্ষেতের কারণে ড্রেজিং করতে বিলম্ব হচ্ছে। আশা করছি জেটির ড্রেজিং কাজ শেষ হলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এ সমস্যা আর থাকবে না।
বিডি প্রতিদিন/এমআই