বাম্পার ফলনের স্বপ্ন বুকে নিয়ে বগুড়ার আমন চাষিরা মাঠে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছে। কৃষি অফিসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও এ বছর আমনের বেশি ফলন পেতে যাচ্ছে বগুড়ার আমন চাষিরা। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন পাবে বগুড়ার চাষিরা এমন কথা বলছেন কৃষি কর্মকর্তারা। ফসলের নতুন গন্ধ মেখে চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে আমন ধান ঘরে তুলতে। চলতি মৌসুমে আমনের চাল আকারে ফলন পাওয়া যাবে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন।
বগুড়া জেলা শহরের শাখারিয়া, সাবগ্রাম, নন্দীগ্রাম সড়ক, কাহালু সড়ক, শিবগঞ্জ সড়ক বেশ কিছু এলাকায় ধান কাটা চলছে। শ্রমিকরা ধলবেঁধে ধানকেটে মাড়ায় করছে।
জানা যায়, বগুড়ার মাঠে মাঠে এখন ধান কাটা মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক। কৃষি শ্রমিকের পাশাপাশি গৃহীনিরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভালো ফলন আর ভালো দাম পেয়ে হাসি ফুটেছে বগুড়ার আমন চাষীদের মুখে। বগুড়ার মাঠে মাঠে এখন চলছে ধান কাটা মাড়াই কাজ। কৃষক-কৃষানীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে ধান ঘরে তুলতে। হাটে বাজারে ধান কেনাবেচা শুরু হয়েছে। ধান উৎপাদনে এবারও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি বিভাগ প্রত্যাশা করছে। শষ্য ভান্ডার খ্যাত বগুড়ার মাঠে আমন ধান কাটার পাশাপাশি ধান মাড়াই করে হাট বাজারে কেনাবেচা শুরু হয়েছে। কাঁচা ও শুকনা ধানের দাম এবারে ভাল বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
জেলার শেরপুর, শিবগঞ্জ, নন্দীগ্রাম সহ প্রায় সব উপজেলাতেই আমনের চাষ হয়ে থাকে। ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা খরচে বিঘাপ্রতি ১৫ থেকে ১৮ মন ধান পাওয়া যায়। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত ধান রোপন করে চাষীরা। নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ধান কর্তন শেষে কৃষকের ঘরে উঠে সোনালী ফসল। সরকারীভাবে ২৭ টাকা কেজি দরে ধান সংগ্রহ শুরু হয়েছে। জেলায় ৯ হাজার ৮শ ৭০ মে: টন আমন ধান সংগ্রহ করা হবে। শিবগঞ্জ উপজেলার বিহার, নাটমরিচায় সহ বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জানান, আমন ধান চাষে খরচ তুলনামুলকভাবে কম। গতবারের চেয়ে এবার ধানের ভালো ফলন হয়েছে, দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ১৮ মন ধান পাওয়া যায়। এবার প্রাকৃতিক দূর্যোগ না থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। খরচ কম হওয়ায় আমন চাষে আগ্রহ বাড়ছে বলে তারা জানান।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর, বগুড়ার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শষ্য) মো: এনামুল হক বলেন, কৃষিতে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে কৃষকদের অবগত করা হচ্ছে। সরকারের প্রনোদনা কর্মসুচি কৃষকদের কাছে পৌছে দেয়া হচ্ছে। এতে করে চাষীরা আমন ধান চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বগুড়া উপ-পরিচালক কৃষিবিদ দুলাল হোসেন, এবার আমনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। ধানকাটা মাড়াই কাজ চলছে, সরকারীভাবে ধান ক্রয় শুরু হয়েছে। ফলন আশানুরুপ হওয়ায় কৃষক লাভবান হবে বলে জানান তিনি। জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৮২ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে, যা থেকে প্রায় ৫ লাখ মে: টন চাল উৎপাদন হবে।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, জেলায় বেশিরভাগ এলাকায় ধান কাটা শেষ হয়েছে। হাটে বাজারে নতুন ধান কেনাবেচা চলছে। মোটা ও চিকন ধানে বাজার এখন ভরে উঠেছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম